বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

------স্মৃতি------ লেখা:- Rahul Paira

------স্মৃতি------ . সেদিনের সেই সময়টা এখনো স্মৃতিতে নক করে। স্মৃতি কি এতোই শক্তিশালী যে চাইলেও ডিলিট করা যায় না। মাঝে মাঝে ফিরে এসে মনের আভ্যন্তরীণ কলকব্জা গুলোকে তছনছ করে দিয়ে চলে যায়। ফেলে যায় কিছু কষ্টের আর সুখের অনুভুতি। যে অনুভুতি গুলো শুধুই চোখের জল ঝরাতে সাহায্য করে। নোনতা জল। . স্বামীর বুকে মাথা রেখে সুখের বিন্দু বিন্দু জলকনার তৃপ্তি সারা মুখে ছড়িয়ে আজো কি আমার নামটা তোমার স্মৃতিতে ভাসে!! নাকি ছবিটাই আবছা হয়ে গেছে!! যে ছবিতে আর কখনো রংতুলির ব্রাশ পড়বে না! . সেদিনের সেই কলেজ ক্যান্টিনে একসাথে বসে মুখে চিনাবাদাম চিবোতে চিবোতে তুমি যে ঘরের ছবি সাজিয়েছিলে, সেটার কি আর অস্তিত্ব আছে!! পরিবেশের বিভাজনের পাল্লায় পড়ে তুমি আজ অনেক দূরে, কখনো কি আলেয়ার পেছনে ছুটেছো!! নাকি আলেয়াই তোমার পিছনে ছুটছে!! . আচ্ছা, আজো কি তোমার দুষ্টুমি গুলো আছে নাকি সংসারের বাঁধনে পড়ে নিজেকে ব্যক্তিত্বময়ী করে তুলেছো!! আগে তো খুব দৌড়াতে, অলিম্পিকে নাম লেখালে হয়তো তুমিই প্রথম হতে। আজো কি সেইরকম দৌড়াতে পারো! নাকি নিজেকে ভারী করে নিয়েছো! . মনে পড়ে একদিন কফি ক্যান্টিনে তুমি ইচ্ছা করেই আমার উপর গরম কফি ঢেলে দিয়েছিলে, পায়ের চামড়া পুড়ে গিয়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিলো, আর্তনাদে আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম, এই অবস্থা দেখে তোমার সেকি কান্না, তারপর মেডিসিন স্টোর থেকে তখুনি বার্নল কিনে এনে পুরোটা আমার পায়ে ঢেলে দিয়েছিলে। আচ্ছা এখনো কি ওই ছেলেমানুষি গুলো তোমার মধ্যে আছে, নাকি সন্তানের বদমাশি গুলো উপভোগ করো!! . একদিন তুমি আমায় ইঞ্জেকশন দিয়েছিলে মনে পড়ে। এই সেদিনের কথা। এখনো ভুলিনি। তুমি এসে আমায় বলেছিলে আমার নাকি জ্বর হয়েছে, ইঞ্জেকশন দিতে হবে, তারপর কোথা থেকে এক পরিত্যক্ত খালি ইঞ্জেকশন জোগাড় করে আমার বাম হাতে শুধু ফুঁড়ে গিয়েছিলে, একবার দুবার তিনবার করে প্রায় সাত আটবার ফুঁড়েছিলে। তারপর পুরো বামহাত জুড়ে রক্তের বিন্দু দেখে তুমি নিজেই অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলে। আচ্ছা এখনো কি রক্ত দেখে সেন্সলেস হয়ে যাও! নাকি আর কিছুই মনের গহীনে দাগ কাটে না!! . এই তো সেদিনের ঘটনাও এখনো আমার চোখে স্পষ্ট ভাসছে। তুমি এসে বলেছিলে তোমায় নাকি ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। ফুচকা চটপটি তেলেভাজা খাওয়াতে হবে। তারপর ফুচকা খেতে খেতে দোকানীর অর্ধেক ফুচকা প্রায় শেষ করে দিয়েছিলে। আচ্ছা এখনো কি ওইভাবে ফুচকা খেতে পারো! নাকি শরীরের কথা ভেবে ফুচকা খাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছো!! . সেই পূর্নিমা রাতটির কথা মনে পড়ে তোমার! যে রাতে গোল থালার মতো চাঁদকে দেখিয়ে তুমি বলেছিলে আমার নাকি চাঁদের পানার মতো মুখ। আচ্ছা আবার কোনো এক পূর্নিমা রাতে চাঁদপানা মুখ তোমার স্মৃতিতে ভাসে! নাকি চাঁদপানা মুখটা মলিন ধূসর হয়ে মিলিয়ে গেছে! . স্মৃতি বড়ো অসহায়। মস্তিষ্কের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে স্মৃতি গুলো শুধুই হৃৎপিন্ডের কুঠুরিতে হাতুড়ির ঘা মারে। আচ্ছা তোমারও সেইরকম হয়! নাকি আবছা হতে হতে তোমার হৃৎপিন্ডের কুঠুরিটাই ব্লক হয়ে গেছে! খুব জানতে ইচ্ছে করে। নিয়তির পরিহাসে আজ তুমি বহুদূরে। মনের গহীনে আজো আছো তুমি। শুধুই তুমি.... . লেখা:- Rahul Paira

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন