বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮
বাংলা রচনা
রচনা
সময়ের মূল্য
সূচনাঃ সময় প্রতিটিখেত্ত্রে মূল্যবান।এটি নদীর স্রোতের মত বয়ে চলে।সৃষ্টির শুরু থেকে সময় বয়ে চলছে।তাই জ়ীবনে সময়ের সঠিক ব্যবহার প্রয়োজ়ন।
কথায় আছে-
Money is lost nothing is lost. Health is lost something is lost. But time is lost all things are lost.
সময়ের মুল্যঃমানুষের জীবন খুবই ক্ষনস্থায়ী। এই ক্ষনস্থায়ী জীবনকে সার্থক করে তুলতে সময়কে কাজে লাগাতে হবে।মানুষের জ়ীবনের অগ্রগতিতে সময়ের মূল্য অনেক।সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে আসেনা।
কথায় আছে-
সময়ের এক ফোঁড়,অসময়ের দশ ফোঁড়।
যারা সময়ের মূল্য দিয়েছেন তারা হয়েছেন জ়ীবনের যুদ্ধে জয়ী ও লাভবান।মহামানবদের জ়ীবনী পড়লে আমরা এ কথা জানতে পারি।
সময়ের সদব্যবহারঃ একটি কাজ যথাসময়ে সম্পাদন করাই সময়ের সদব্যবহার।অযথা সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।আজ়কের কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখা ঠিক নয়।সময়ের কাজ সময়মত করা উচিত।
সময়ের অপব্যবহারঃসময় নষ্টকারী জিবনে উন্নতি করতে পারে না।যে কৃ্ষক সময় মতো জমি চাষ করে না বীজ বপন করে না।সে কখনো ভালো ফসল আশা করতে পারে না।সময়ের সদব্যবহার একটি জীবনকে পূর্ণতা দেয়,অপব্যবহার জীবনকে ধূসর করে দেয়।
ছাত্রজীবনে সময়ের মূল্যঃ ছাত্রজীবনে সময়ের সদ্বব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক।ছাত্রজীবনেই “পড়ার সময় পড়া এবং খেলার সময় খেলা।“ এ নিয়ম মেনে চলা উচিত। এতে পরবর্তী জীবনে সময়নিষ্ট হওয়া যায় এবং জীবনে উন্নতী করা যায়। ছাত্রজীবন পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতিকাল।
উপসংহারঃযারা সময়ের সঠিক মুল্য দেবে তারা হবে জীবনের যুদ্ধে জ়য়ী।সময়ের অপব্যবহার করে অনেক প্রতিভাবান লো্কও অধঃপতিত হয়েছে।তাই জীবনকে সুন্দর,সার্থক ও গৌ্রবময় করতে হলে সময়ের মূল্য বুঝে কাজ করতে হবে.
by rifa
বাংলাদেশেরপাখি
ভূমিকা: বাংলাদেশের অপরূপ প্রকৃতির এক অপূর্ব উপহার পাখি। এ দেশের মানুষ পাখির ডাকে ঘুমিয়ে পড়ে আবার পাখির ডাকে জাগে। বিভিন্ন ঋতুতে বাংলাদেশে নানা রকম পাখি দেখা যায়।
পরিচিতপাখি: আমাদের চেনা-জানা পাখির সংখ্যা অনেক। দোয়েল, কোকিল, ময়না, টিয়া, কাক, পায়রা, চিল, মাছরাঙা, কাকাতুয়া, বাবুই, কাঠঠোক্রা, চড়ুই, টুনটুনি, বুলবুলি, বউ কথা কও, শালিক, ঘুঘু, বক—এসব আমাদের খুব পরিচিত পাখি।
বিভিন্নপাখিরবর্ণনা: পাখি অনেক রকমের আছে। এদের মধ্যে গানের পাখি, শিকারি পাখি, রাতের পাখি, ঝিল-পুকুরের পাখি, শীতের পাখি ও পোষা পাখি উল্লেখযোগ্য।
গানেরপাখি: গানের পাখির মধ্যে অন্যতম দোয়েল। গরমের দিনে ঘরের পাশে, লেবুর ডালে, ডালিম শাখায় দোয়েল মনের সুখে গান করে। দোয়েলের মতো গানের গলা খুব কম পাখিরই আছে। শীতের সময় দোয়েল গান করে না। দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। শীতের শেষে বসন্ত ঋতুর আগমনীবার্তা নিয়ে আসে কোকিল। কোকিলকে তাই বলা হয় বসন্তের দূত। দেখতে কালো হলেও কোকিলের গানের গলা খুবই মিষ্টি। কোকিলের ‘কুউ-কুউ’ ডাক গানের চেয়েও মধুর। কোকিল কখনো মাটিতে নামে না।
গানের পাখির মধ্যে সবচেয়ে ছোট টুনটুনি। দেখতে ছোট হলেও টুনটুনির গানের গলা বেশ মিষ্টি আর জোরালো। টুনটুনি বেশিক্ষণ উড়ে বেড়াতে পারে না। শ্যামা, বুলবুলি, বউ কথা কও এরাও খুব সুন্দর গানের পাখি।
শিকারিপাখি: মাছরাঙা, বাজপাখি, শকুন, চিল, বক—এসব শিকারি পাখি। মাছরাঙা পুকুর পাড়ে মাটির গর্তে বাস করে আর সুযোগ বুঝে পানিতে টুপ করে ডুব দিয়ে ছোট মাছ ধরে খায়। বাজ আর চিল আকাশের অনেক উঁচুতে উড়ে বেড়ালেও দৃষ্টি থাকে নিচে। সুযোগমতো এরাও ছোঁ মেরে মুরগির ছানা ও অন্যান্য ছোট প্রাণী নিয়ে গাছের ডালে বসে খায়। বক দল বেঁধে আকাশে উড়ে বেড়ায়। আবার খাবার সময় হলে ঝিল-পুকুরের পাড়ে বসে মাছ ধরে খায়।
রাতেরপাখি: পেঁচা আর বাদুড় রাতের পাখি। এরা দিনের বেলা বের হয় না। পেঁচা বিভিন্ন পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে থাকে। বাদুড় গাছের ফল খায়।
ঝিল–পুকুরেরপাখি: পানকৌড়ি, হাঁস, সারস, কোঁড়া—এসব ঝিল-পুকুরের পাখি। এরা ঝিল-পুকুরের পানিতে চরে বেড়ায় আর শামুক, ছোট মাছ ও জলের পোকামাকড় খেয়ে থাকে।
পোষাপাখি: ময়না, টিয়া, কাকাতুয়া, শ্যামা, শালিক, ঘুঘু, পায়রা—এসব পাখি ঘরে পোষা যায়। পোষা পাখির মধ্যে ময়না সবচেয়ে মজার পাখি। শিখিয়ে দিলে পোষা ময়না মানুষের মতো কথা বলতে পারে এবং মানুষের অনুকরণে নানা রকম শব্দ ও গান করতে পারে। ময়না কালো রঙের পাখি। তবে গলার কাছে একটি হলদে রেখা আছে। টিয়ে পাখির পালক হলদে শ্যামল, ঠোঁট লাল রঙের। শালিক, ঘুঘু ও কবুতর খুবই নিরীহ পাখি।
গৃহপালিতপাখি: মুরগি-হাঁস গৃহপালিত পাখি। এসব পাখি বাংলাদেশের প্রায় সব ঘরে দেখতে পাওয়া যায়। হাঁস ও মুরগির ডিম আমাদের খুবই প্রিয় খাবার।
উপসংহার: পাখি বাংলাদেশের প্রকৃতির এক মূল্যবান সম্পদ। শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়, আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও পাখির ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রয়োজনে পাখিসম্পদ সংরক্ষণ করা উচিত।
এ রচনার অনুসরণে লেখা যায়: আমার চেনা পাখি, কয়েকটি পরিচিত পাখি
বাংলাদেশেরফসল/শস্য
সূচনাঃবাংলাদেশ ফুল, ফল এবং ফসলের দেশ। সারা বছরব্যাপি এদেশের জনগণ তাদের জমিতে বিচিত্র ফসল ফলিয়ে থাকে। ধান, গম, মরিচ, ডাল, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, বিচিত্রফল, পাট, চা, তুলা, তামাক, বাঁশ, ইক্ষু, রাবার ইত্যাদি হলো গুরুত্বপূর্ণ।
ফসলেরশ্রেণীবিভাগঃ ধান, গম, ডাল, মরিচ, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ ইত্যাদি হলো খাদ্য শস্য এবং পাট, চা, তামাক,তুলা, বাঁশ, রাবার ইত্যাদি হলো অর্থকরী ফসল বা শস্য। খাদ্য শস্য খাওয়া হয় এবং অর্থকরী ফসল যোগান দেয়।
খাদ্যশস্যঃ সকল খাদ্য শস্যের মধ্যে ধান হলো আসল। বাংলাদেশীদের প্রধান খাদ্য হলো ধান। ধান চার ধরণের যেমন-আমন, আউস, বোরো এবং ইরি। ধান বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্মে থাকে। আজকাল প্রচুর গম উৎপাদন করা হয়। এগুলো ছাড়া, মরিচ, বালি, যোয়ার এবং বাজরাও আমাদের দেশে উৎপন্ন হয়।
অর্থকরীফসলঃ অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট, চা, তুলা, রাবার, এবং তৈল বীজই হলো গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ পৃথিবীর ৮৫% পাট উৎপাদন করে থাকে। পাট এদেশের জেলাতেই জন্মে । এর পরে গুরুত্ব ফসল হলো চা। চা সিলেট ও চট্রগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলে উৎপন্ন হয়। তুলা , রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ এবং পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলে উৎপন্ন হয়। এগুলো আমাদের নিজেদের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।
ফসলাদিঃবিভিন্ন রকমের ফল-আম, আনারস,কাঁঠাল, কমলা, কলা এবং নারিকেল আমাদের দেশে উৎপন্ন হয়। কলা আর নারিকেল সারা বছর ধরে আমরা পেয়ে থাকি।
ফসলেরঅর্থনৈতিকমূল্যঃ আমাদের দেশের অর্থনীতি ফসলের উপর নির্ভরশীল। আমাদের দেশে অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে যাতে দেশের আভ্যান্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করে অর্থ আয় হয়। বেশি করে পাটকল, তুলাকল, চা – কারখানা, তামাক – কারখানা এবং চামড়া কারখানা স্থাপন করা যেতে পারে যাতে দেশে উৎপাদিত দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে।
উপসংহারঃবাংলাদেশ ফসল বা শস্যের দেশ। আমাদেরকে অধিক পরিমাণ শস্য উৎপাদন করতে হবে যাতে আমরা এদেশকে পৃথিবীতে ধনী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।
বাংলাদেশের পাখি
বাংলাদেশের পাখি
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বংলাদেশকে বিভিন্ন প্রজাপতির পাখির আবাস স্থলে পরিনত হতে সাহায্য করেছে। ঋতু পরিবর্তনের সাথে এখানে বিভিন্ন আকৃতির, রঙের এবং গঠনের পখির বিচরণ দেখা যায়।
নানাজাতেরপাখিঃ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে দোয়েল, কাক, মাছরাঙা, চড়ুই, চিল, সারস, কবুতর, বৌ-কথাকও, ময়না, কোকিল প্রভৃতি।
বর্ণনাঃ দেয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। এটি দেখতে খুব সুন্দর। এটি আকৃতিতে ছোট। ইহার দেহ কাল এবং সাদা রঙের পালকে আবৃত । বাংলাদেশের সর্বত্র এ পাখিটি দেখা যায়। কাক কালো এবং কদাকার পাখি। এটি তিন জাতের, দাড়কাক, পাতি কাক এবং কৃঞ্চ কাক।
ইহার লম্বা এবং শক্ত ঠোঁট আছে। উচু গাছে ইহা তাদের বাসা বাঁধে। ইহা কীটপতঙ্গ, ভাত এবং শস্য খায়।
বাংলাদেশের একটি সুন্দর পাখি হচ্ছে মাছরাঙা। এটি আকারে ছোট। ইহার নম্বা ঠোঁট আছে এবং মাথা বাদামী বর্ণের। ইহা ছোট মাছ খায়। পুকুর অথবা নদীর কিনারায় এটি বাস করে। চিল বাংলাদেশের আরেকটি কদাকার পাখি। এটি আকাশের উঁচুতে উড়ে। ইহার দৃষ্টি শক্তি খুব তীক্ষ্ণ। ইহা ছোঁ মেরে নীচে এসে ব্যাঙ এবং মাছ ধরে । মাঝে মাঝে ইহা মুরগীর বাচ্চা চুরি করে। উঁচু গাছে ইহারা তাদের বাসা তৈরী করে।
সারস পাখির লম্বা গলা এবং শক্ত ঠোঁট আছে। এটি জলাশয় বা নদীর ধারে বাস করে। মাছ খেয়ে ইহা জীবন ধারণ করে। কবুতর একটি ছোট পোষা পাখি। ইহার দেহ ছোট এবং নরম পালকে আবৃত। ইহা চাল, শস্যাদি এবং পোকামাকড় খায়। বৌ-কথাকও বাংলাদেশের কোন বিশেষ সময়ের একটি পাখি। এটি সাধরনতঃ বসন্তকালে দেখা যায়। বাংলাদেশের আরেকটি সুন্দর পাখি ময়না । বাদামী বর্ণের এ পাখিটির ঠোঁট হলুদ। এর পাগুলোও হলুদ। ইহা একটি পোষা পাখি। এটি অতি সহজেই অন্যের কন্ঠ অনুকরণ করতে পারে। অনেক লোক এটাকে পোষা পাখি হিসেবে পালন করে। মাছ এবং শস্য খেয়ে ইহা জীবন ধারন করে।
উপসংহারঃ বাংলাদেশে আরো বিভিন্ন প্রজাপতির পাখি আছে। এগুলো বর্ণে,ম আকারে এবং গঠনে বিভিন্ন ধরণের। এই পখিগুলো ব্যপকভাবে বাংলাদেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।
বাংলাদেশের শীতকাল
শীতকাল
সূচনাঃ বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ। শীতকাল তাদের অন্যতম। হেমন্তের পরেই শীতের আর্বর্ভাব। পৌষ এবং মাঘ মাস নিয়ে শীতকাল। ইহা গ্রীষ্মের বিপরীত। সারা দেশকে শীত কাঁপিয়ে তোলে। কিন্তু ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো বাংলাদেশে শীত ততটা যন্ত্রনাদয়ক নয়।
প্রধানবৈশিষ্ট্যঃ শীতকার কুয়াশাচ্ছন্ন হয়। শীতকালে রাতে এবং সকালে সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত কুয়াশা পড়ে। গাছের পাতার উপরে অথবা ঘাসের ডগায় কুয়াশা জড়ো হয়ে ফোটায় পরিনত হয়। ভোরের সূর্যের রশ্মিতে যখন এগুলোর ফোটা চকচক করে তখন এগুলোকে হীরকের মতো মনে হয়।
সুবিধাঃ শীতকাল সম্পূর্ণরূপে অভিশাপ নয়। বিভিন্ন ক্রিয়া কর্মের জন্য শীতকাল একটা সুন্দর সময়। শীতকালে খেজুর গাছ থেকে রস পাওয়া যায়। এই দিয়ে গুড়, মিছরি এবং চিনি তৈরী হয়। তাই এই ঋতুতে গৃহকত্রীরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরী করে থাকেন। শীতকারে শাকসবজি এবং ফলমুল যেমন- বাধাকপি, ফুলকপি, পিয়াঁজ এবং কমলা প্রচুর পরিমাণে জন্মে।
অসুবিধাঃ শীতকালে রাত, দিন অপেক্ষা অনেক দীর্ঘ হয়। উত্তর দিক থেকে ঠান্ডা বায়ু প্রবাহিত হয়। ধনী লোকেরা শীতকালে দিনের বেলায় গরম গরম কাপড় পরিধান করে এবং রাতে লেপের দ্বারা আবৃত হয়ে থাকে। কিন্তু শীতকাল গরীবদের জন্য অসহীয় কষ্টদায়ক কারণ তারা কাপড় কিনতে পারে না।
উপসংহারঃ শীতকালে প্রকৃতিকে বিষন্ন মনে হয়। এ সময় গাছপালা পাতাশূন্য হয়ে পড়ে । এ ঋতুতে পাখিরা বিভিন্ন দেশে বেড়াতে যায়।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
বাংলাদেশপ্রাকৃতিকসৌন্দর্য
সূচনাঃ বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। যাঁরা বিশ্ব প্রকৃতির অনন্ত বিচিত্রির মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেতে চায়, তাঁদের পক্ষে এদেশের নির্মল আকাশ, নদী-কান্তার, পুষ্প-পল্লব, বটকৃক্ষ ছায়া এবং সুশীতল পল্লী বীথিকায় আছে এক অপূর্ব আবেদন।
ভূমিরসৌন্দর্যঃ বাংলাদেশের আয়তন প্রায় ১৪৪ বর্গ কিলোমিটার। এর সমগ্র ভূমিই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। বিরাট এলাকা জুড়ে রয়েছে এর সমতল ভূমি, যা দেখেতে খুবই সুন্দর। অন্যদিকে সিলেট, কুমিল্লা, চট্রগ্রাম ও পার্বত্য চট্রগ্রামে রয়েছে উঁচু উঁচু পাহাড়। এছাড়াও এখানে আছে ঘন বন। যার মধ্যে খুলনা সন্দর বন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার এ সুন্দর বনেই বাস করে। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের দৃশ্যাবলী শুধুমাত্র এদেশের মানুষের জন্যেই নয়: বরং সমগ্র বিশ্বের পর্যটকদের জন্য আকর্ষনীয়।
নদন-নদীর সৌন্দর্যঃ বাংলাদেশ একটি নদীর দেশ। পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা বাংলাদেশরে বড় নদী। সমতল ভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীর পানি মাটিকে গাছপালা বৃদ্ধির জন্য উর্বর করে তোলে। এ নদীগুলোর অবদানের ফলেই বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাগান বলে অভিহিত করা যায়।
বিভিন্ন ঋতুর সৌন্দর্যঃ বাংলাদেশে বার মাস ধরেই চলে ষড় ঋতুর বৈচিত্রাবলী। গ্রীষ্মকাল সূর্য উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং মাটিতে আনে তীব্র আঘাত। সূর্যের এই দগ্ধ তাপে মানুষ হয়ে উঠে ক্লান্ত । কিন্তু গ্রীষ্মকালীন আম, কাঁঠাল এবং লিচু অবসন্নত দূর করে দেয়। এর পরই আকাশ হয়ে উঠে মেঘাচ্ছন্ন। আর প্রবল বৃষ্টিতে প্রকৃতি ঠান্ডা হয়ে হয়ে যায়। বর্ষাকালের বিদায়লগ্নেই অগমন হয় শরতের। হেমন্ত হচ্ছে শরতের অগ্রদূত। এ ঋতু আমাদের দেশের কৃষকদের জন্য খুবই আনন্দের কারণ তখন তারা ধান কেটে বাড়ি নেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে। কনকনে ঠান্ডা নিয়ে আসে শীতকাল। প্রকৃতিকে নির্জীব এবং নিরলস দেখা যায়। শীতের পর পরেই আসে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছে গাছে ফুল ফোটে, আর আমাদের দেয় মিষ্টি গন্ধ।
উপসংহারঃ বাংলাদেশের বুকে সারা বছরই সীমাহীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিরাজ করে। মানুষের মন ও চরিত্রের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ সম্পদ।
আমার প্রিয় শিক্ষক
আমারপ্রিয়শিক্ষক
সূচনাঃ শিক্ষকরা হলেন আমাদের পথ প্রদর্শক, দার্শনিক এবং বন্ধু । আমি আমার সকল শিক্ষককে পছন্দ করি এবং সম্মান করি। প্রত্যেক শিক্ষকের নিজস্ব একটা যোগ্যতা আছে তারা আমার জন্য যাহা করেছেন তার জন্য আমি তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমার প্রিয় শিক্ষক হচ্ছেন জনাব নজুরুল ইসলাম যিনি আমাদের ইংরেজী পড়ান।
তারশিক্ষাগতযোগ্যতাঃ জনাব নজরুর ইসলাম হলেন ইংরেজীতে এম. এ.এম.এড। আমি শুনেছি যে তিনি খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন।
কেন আমি তাকে অধিক পছন্দ করিঃ আমি তাকে অনেক কারণে সর্বাপেক্ষা বেশী পছন্দ করি। তিনি আমাদের ইংরেজী সাহিত্য পড়ান এবং যে কেউ দেখতে পাবেন যে তিনি তার বিষয়কে শ্রদ্ধা করেন। আমার প্রিয় শিক্ষকের কন্ঠস্বর সুন্দর। যখন তিনি কথা বলেন তখন সবাইকে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়। যখন তিনি কিছু বলেন আমি তাহা মনোযোগ দিয়ে শুনি। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক। তাহার মহৎ চরিত্র, কথা বলার কৌশল এবং শিক্ষাদান পদ্ধতি আমাকে খুব মুগ্ধ করে। তিনি অতিরিক্ত কথা বলেন না। তাহার কথা বলার বাচন ভঙ্গি সাদাসিদে, স্বতন্ত্র এবং বেগবান। তিনি আমাদের ক্লাসের নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলেন। তিনি দৈহিক শাস্তি প্রদান করেন না। তাহার হাসিমুখ মিশ্রিত উপদেশ এবং নির্দেশনা আমাদের সকলের মনে ছাপ ফেলে। তিনি আমাদের সুখ দুঃখে অংশীদার হন। সকল সম্ভাব্য উপায়ে তিনি আমাদের পথ নির্দেশনা দেন। গরীব ছাত্রদের তিনি বাধা দেন এবং পুনরায় সুন্দর করে গড়ে তোলেন। এ সকল কারণে আমি তাকে সর্বাধিক পছন্দ করি।
উপসংহারঃ জনাব নজুরুল ইসলাম হলেন যথোপযুক্ত রুচিসম্পন্ন এক মহৎ লোক । স্বভাবে তিনি পরিস্কার এবং পরিচ্ছন্ন । তিনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করেন। তার মতো একজন শিক্ষক যে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ব। অন্যদের মতো আমি তাকে একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে দেখেছি।
আমাদের খাদ্য সমস্যা
বাংলাদেশেখাদ্যসমস্যা
সূচনাঃ এক সময় বাংলাদেশ ছিল শস্যের ভান্ডার। কিন্তু সেই সুখের দিন আজ চলে গেছে। এখন আমরা প্রকট খাদ্যের অভাবে ভূগছি। ইহা আমাদের অস্তিত্তের হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।
সমস্যারবর্তমানঅবস্থাঃ খাদ্য সমস্যা অনেকাংশে শস্যের উৎপাদন এবং ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। আমাদের কৃষকেরা এখন তাদের প্রাপ্ত ফসলের সঠিক মূল্যায়ন এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যদি তারা এ সকল সবিধা পেত তাহলে হয়ত বা তারা সচ্ছল হতে পারত।
সমস্যারকারণঃ বাংলাদেশে খাদ্য সমস্যার অনেক কারণ আছে। আমাদের চাষাবাদ পদ্ধতি এবং খাদ্য উৎপাদনের অন্যান্য পন্থাগুলো ক্রুটিপূর্ণ এবং অবৈজ্ঞানিক। প্রধানতঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- বন্যা, ঘুর্নিঝড়, খরা এবং কীটপতঙ্গ প্রতি বছর আমাদের উৎপন্ন ফসলের ক্ষতি করে। পক্ষান্তরে অজ্ঞতার কারণে কৃষকেরা কাঙ্খিত খাদ্য উৎপন্ন করতে পারে না। আর এ কারণে আমাদের খাদ্য সমস্যা।
সরকারেরভূমিকাঃ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছেন যারা অধিক মুনাফার লোভে খাদ্যকে গুদামজাত করে কৃত্তিম সমস্যার সৃষ্টি করেন । এক্ষেত্রে সরকারকে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করা দরকার। অবশ্যই তাৎক্ষনিকভাবে অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে আটক করা এবং উপযুক্ত শাস্তি দেয়া উচিৎ। সরকারের উচিৎ একান্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী যেমন চাল, চিনি, লবন, মসলা এবং পিয়াজ আমদানী করা । এমনকি সরকারের উচিৎ পুলিশ বাহিনী দ্বারা কালোবাজারীদের প্রতিরোধ করা।
সমাধানঃ এ সমস্যা সমাধানের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং সমবায় সমিতির মাধ্যমে চাষাবাদ পদ্ধতির প্রবর্তন করা উচিৎ। সরকার কর্তৃক কৃষকদের উন্নত বীজ, সার, ধান প্রভৃতি সরবরাহ করা উচিৎ। সরকার কর্তৃক শুষ্ক মৌসুমে কৃত্রিম পানি সেচের যন্ত্রপাতিরও সংশোধন করা উচিৎ। সর্বোপরি, সমাজ থেকে নিরক্ষরতা দুরীকরণের জন্য পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ যাতে কৃষকেরা অতি সহজে যান্ত্রিক চাষাবাদ এবং উপযুক্ত সময়ে কীটনাশক ঔষধ এবং সার প্রয়োগের ব্যবহার বিধি শিখতে হবে।
উপসংহারঃ পরিশেষে আমরা বলতে পরি খাদ্য সমস্যা হল প্রকৃতি এবং মানুষ উভয় কর্তৃক সৃষ্ট সমস্যা। আমাদের উচিৎ এ সমস্যাগুলো দূরীভূত করার জন্য আমাদের সকল প্রচেষ্টা এবং দক্ষতার সক্রিয় প্রয়োগ এবং বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে তোলা।
বাংলাদেশের কৃষক
কৃষক
সূচনাঃবাংলাদেশ প্রধানত একটি কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি হল এদেশের অর্থনীতিরি ভিত্তি। যে সকল লোক জমি চাষ করে তাদেরকে কৃষক বলা হয়। কৃষকেরা ফসল জন্মায় যা আমাদের মৌলিক প্রয়োজনে অতীব গুরুত্বপূণ। তারা আমাদের দেশের মেরুদন্ড।
কৃষকদেরবৈশিষ্ট্যঃ আমাদের দেশে তিন শ্রেণীর কৃষক আছে। ধনী উচ্চ শ্রেণীর কৃষক, মধ্য শ্রেণীর কৃষক এবং ভূমিহীন কৃষক। মধ্য শ্রেণীর কৃষকসহ আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষকেরা সাধারনত নিজেদের ষাঁড় দিয়ে জমি চাষ করে এবং কোন রকমে তার নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য জন্মাতে পারে। ধনী শ্রেণীর কৃষকের সংখ্যা খুবই কম এবং তারা তাদের সাধারন জীবনযাপনের পরেও জমি থেকে অনেক সম্পদ পায়। ভূমিহীন কৃষকেরা অন্যের জমি চাষাবাদ করে এবং জমির মালিকের কাছ থেকে তারা ফসলের সামান্য অংশ পায়।
চাষাবাদপদ্ধতিঃ আমাদের দেশের চাষাবাদ পদ্ধতি খুবই অপ্রচলিত। কৃষকদের অধিকাংশই গরীব এবং মূর্খ। চাষাবাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মতো সামর্থ্য তাদের নেই। তারা বলদ দিয়ে তাদের জমি চাষ করে এবং ফসল কাঁটতে কাস্তে ব্যবহার করে। তার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জমি চাষ করার নিয়মো জানে না। যার ফলে চাষাবাদের জমি থেকে আমরা ভাল উৎপাদন পাই না।
কৃষকদেরঅবস্থাঃ আমাদের কৃষকদের জীবনমান খুবই নিম্ন। এমনকি তাদেরকে জীবনধারনের জন্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবেও কষ্ট ভোগ করতে হয়। তার হতভাগ্য, তাদের প্রতি মন্দ আচরণ করা হয় এবং তারা আধুনিক বিজ্ঞানের জ্ঞান থেকে বঞ্চিত । তারা কঠোর পরিশ্রম করে কিন্তু উপযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য পায় না। যার ফলে তারা বিভিন্ন রোগে ভোগে। তাদের ছেরে মেয়েরা ভাল শিক্ষা পায় না এবং তারা পূর্ব পুরুষদের পথ অনুসরণ করে।
গৃহীতপদক্ষেপসমূহঃ আমাদের কৃষকদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতিকল্পে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। তাদেরকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া উচিৎ। তাদের হাইব্রিড বীজ, সঠিক কীটনাশক ঔষধ এবং উপযুক্ত পরিমাণে সার দিতে হবে যাতে করে তারা অধিক খাদ্য জন্মাতে পারে। কৃষিজাত দ্রব্যের ন্যায় সংগত মূল্য নির্ধারণ করতে হবে যাতে কৃষকেরা তাদর ফসলের সঠিক মূল্য পেতে পারে। সেচ ব্যবস্থার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং কৃষকদের কম সূদে ধান সুবিধা দিতে হবে।
উপসংহারঃআমাদের দেশের উন্নতি প্রধানত আমাদের কৃষির উন্নতির উপর নির্ভরশীল। আমাদের কৃষকদের অবহেলা করা উচিৎ নয় এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের সকল সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।
আমার মা
মা/আমার মা
সূচনাঃ ‘মা’ শব্দটি আমার কাছে খূবই প্রিয়। এই পৃথিবীতে আগমনের পূর্ব পর্যন্ত তিনি আমাকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন। যখন আমি কেবল শিশু ছিলাম তখন তিনি আমাকে স্তন্য পান করিয়েছেন এবং এভাবে আমি বড় হয়ে উঠেছি। আমি কখনও আমার মাকে ভুলতে পারি না। আমার সকল স্বপ্ন তাকে নিয়ে। আমি পাগল হয়ে যাই যখন আমি তাকে দেখতে না পাই। যে কোন বিপদে তিনি আমার আশ্রয়স্থান।
মায়েরধর্মীয়মর্যদাঃ পরিবারে মায়ের স্থান অনেক উপরে। ইসলাম ধর্মে বর্নিত আছে “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত।” আল্লাহ নির্দেশ করেছেন, তোমরা আমার ব্যতীত যদি অন্য কাউকে সেবা করতে চাও তাহলে তোমাদের পিতা মাতার সেবা কর। সকল ধর্মেই মায়ের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে।
আমারব্যস্ততমমাঃ আমার মা একজন গৃহীনি। আমাদের সাত সদস্যবিশিষ্ট সংসারের যাবতীয় গৃহস্থালীর কাজ কর্ম তাকে করতে হয়। তিনি আমাদের সেবা যত্ন করেন এবং পিতাকেও বিভিন্ন কাজে সাহায্য করেন। তিনি নিজেই আমাদের পোশাক তৈরী করে দেন। তিনি আমাদের দেখা শুনা, কাপড় ধোয়া, ঘর পরিস্কার প্রভৃতি কাজ করে থাকেন। সংসার রক্ষনাবেক্ষনের ব্যাপারে তার ভুমিকা খুবই প্রশংসনীয়। কাজ করতে তিনি ক্লান্তি বোধ করেন না। আমি অবাক হয়ে যাই যে তিনি খুব সকাল থেকে কাজ শুরু করেন এবং অবিরাম কাজ করতে থাকেন। আমাদের পরিবারের সাবাই তার বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সম্পর্কে তিনি খুবই সচেতন। আমরা যখন আসুস্থ্ হই তখন তিনি আমাদের সেবা করেন। আমি আমার মাকে নিয়ে খুব গর্বিত।
আমারবিষন্নমাঃ আমার মা একজন স্নাতক ড্রিগ্রীধারিনী। এমনকি তখন থেকেই তিনি স্পষ্টত একজন গৃহিনী । তিনি যে কোন মর্যাদাপূর্ণ চাকুরী করতে সক্ষম। কিন্তু আমার পিতা তাকে বাহিরের কাজ কর্ম করা থেকে বিরত রেখেছেন। পিতার রক্ষনশীল মনোভাবের জন্য মা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু তার পক্ষে কিছুই করার ছিল না। এমনকি আজও আমার মা পিতার অবিচারের কথা ভূলতে পারে নাই।
উপসংহারঃ মা এবং মাতৃভূমি স্বর্গ থেকেও উত্তম। আমার মা-ই হচ্ছে আমার জীবন। আমি আমার মাকে ছাড়া কিছু চিন্তা করতে পারি না। আমি আমার জীবনের চেয়ে মাকে বেশী ভালবাসি।
আমাদের জাতীয় ফল / কাঠাল
কাঁঠাল/জাতীয়ফল কাঁঠাল
সূচনাঃ কাঁঠাল আমদের জাতীয় ফল । ইহা সকল ফলের মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড়। ইহা খুব সুস্বাদু ফল এবং প্রায় সকলেই ইহাকে পছন্দ করে। আমাদের দেশের সর্বত্রই এ ফলটি অহরহ পওয়া যায়।
কোথায়জন্মেঃ আমাদের দেশের সব জায়গাতে কাঁঠাল জন্মে। কিন্তু তুলনামূলকভাবে উঁচু জায়গা যেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, সেখানটাতে কাঁঠাল চাষের জন্য উপযুক্ত। টাংগাইল, মধুপুর, ভওয়াল গড়, যশোর, রাজশাহী, দিনাজপুর এবং সাভারে প্রচুর কাঁঠাল জন্মে।
বর্ণনাঃ কাঁঠাল খুব বড় আকৃতির ফল। ইহার ওজন ৫ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত হয়। ইহার আবরণ কাঁটা ভরা এবং দেখতে হলুদ কিংবা কাল বর্ণের । ইহাতে প্রচুর পরিমানে কোষ থাকে যেগলো দেখতে হলুদ বর্ণের। পত্যেক কোষে একটি বীচি থাকে । আমরা শুধু কোষ খাই। এই কোষ থেকে আমরা রসও পাই । যখন ইহাকে নিষ্পেষিত করা হয়। কাঁঠাল গাছ খুব বড় হতে পারে। সাধারণতঃ খুব বড় গাছগুলোতে কাঁঠাল দেখতে পাওয়া যায় । স্বভাবত কাঁঠাল গাছের মাথা থেকে গোড়া পর্যন্ত কাঁঠাল দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও ছোট গাছগুলোতে কাঁঠাল ধরতে দেখা যায়। বৈশাখ থেকে আষাঢ় হচ্ছে কাঁঠাল ফলের মৌসুম। কাঁঠাল পাকতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে।
খাদ্যমানঃ কাঁঠাল অধিক ক্যালরীযুক্ত ফল্ ইহাতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন আছে। বিশেষ করে ভিটামিন এ। আমাদের চোখের জন্য ভিটামিন এ খুবই অপরিহার্য। এ ফলের রস বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈর করতে ব্যবহৃত হয়। মুড়ির সাথে কাঁঠালের কোষ গ্রাম্য লোকদের কাছে খুবই প্রিয়। কোষের মধ্যস্থিত বীচিগুলোও খুব ভাল খাবার। কাঁচা কাঁঠাল খুব সুন্দরভাবে রান্না করা হয়ে থাকে। এই বীচিগুলো যদি গবাদিপশু খেয়ে না ফেলে তাহলে ইহা অনুরূপ খাদ্য হিসেবে রান্না হয়ে থাকে।
অর্থনৈতিকগুরুত্বঃ বেদেশীদের কাছে কাঁঠাল খুবই প্রিয়। কাজেই ইহা বিক্রি করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। অবশ্য কাঁঠাল গাছও খুব উপকারী। কাঁঠাল গাছের কাঠের রং খুব চমৎকার এবং ইহা দীর্ঘ দিন টিকে । বিভিন্ন ধরনের আসবাব পত্র তৈরী করতে এই কাঠ ব্যবহৃত হয়। এ গাছের পাতাও খুব উপকারী। এই পাতা ছাগলে খায় এবং ইহা খাদ্য রান্নার কাজে জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
উপসংহারঃ কাঁঠাল অতি উপকারী ফল এবং আমদের দেশের আবহাওয়া ভাল কাঁঠাল চাষের জন্য উপযুক্ত। কাজেই আমাদের অধিক কাঁঠাল জন্মানো উচিৎ এ ফল যাতে সারা বছর সহজে পাওয়া যায় তার জন্য ইহা সংরক্ষণের জন্য সকল সম্ভাব্য পন্থা নিয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা করা উচিৎ।
বাণিজ্য মেলা
বানিজ্যমেলা
সুচনাঃ বানিজ্য মেলা বলতে সচরাচর ঘেরা করা কোন নির্দিষ্ট স্থানে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উৎপন্ন দ্রব্যের প্রর্দশণীকে বুঝায় ঐ সকল লোক যারা ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে জড়িত বিশেষ করে শিল্পপতিবৃন্দ কর্তৃক এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জিনিস সর্ম্পকে লোকজনের ধারণা দেয়ার জন্য ইহা একটি উত্তম মাধ্যম।
স্থানএবংসময়কালঃ বানিজ্য মেলা সচরাচর ঐ ধরণের স্থানে অনুষ্ঠিত হয় যেখান থেকে শহরের প্রতিটি অঙশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধাজনক। বানিজ্য মেলা প্রধানতঃ শহরাঞ্চলে লক্ষ্যনীয়, গ্রামাঞ্চলে নয়। ইহার স্থায়ীত্ব সাধারণতঃ ১৫ দিন থেকে ১ মাস। ইহা বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠন/প্রতিষ্ঠানঃ বানিজ্য মেলা সাধারণত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত হয়ে থাকে। এ মেলা আয়োজনের জন্য সরকারী এবং বেসরকারীভাবে একটি যৌথ কমিটি গঠণ করা হয়। ইহার রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় ভার বিক্রিত টিকিটের মূল্য বা প্রবেশমূল্য এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র দোকান এবঙ তাবু থেকে গৃহীত অর্থ দিয়ে মেটানো হয়।
বাণিজ্যমেলারবর্ণনাঃ মেলার স্থানটি প্রবেশ দরজা এবঙ বর্হিগমন দরজাযুক্ত শক্ত বেষ্টনি দ্বারা ঘেরাও করা থাকে। বেষ্টন করা জায়গাটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে বিভক্ত থাকে। প্রবেশদ্বারে মেলার বিভিন্ন অবস্থান সম্বলিত একটি গ্রাফিক চার্ট স্থাপন করা হয়। অস্থায়ী ক্ষুদ্র দোকানগুলো প্রত্যেক খন্ডে সারিবদ্ধভাবে নির্শাণ করা হয়। লোকজনের দৃষ্টি আর্কষনের জন্য দোকান মালিকরা তাদের দোকানগুলো বিভিন্ন রংগের আলো দিয়ে সুসজ্জিত করেন। মেলার আয়োজকরা মেলার নির্ধারিত স্থানটি সুসজ্জিত এবং আলোকিত কনরন। সেখানে গাড়ী রাখার জন্য নিদিষ্ট স্থান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রার্থনা এবং অন্য সকল ধরণের আরাম এবং আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা আছে। মেলাতে চায়ের দোকান, দ্রুত খাদ্য সরবরাহের দোকান, রেস্তোরা এবং পানীয় জলের ভ্রাম্যমান গাড়ী সহজলভ্য।
উপকারিতাঃ বাণিজ্য মেলার গুরুত্ব অপরির্হায। ইহা শুধু জনসাধারণকে তাদের নিজ ভাগ্যোন্নয়নে সক্ষম করে না বরঙ দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতেও সহায়তা করে। শিক্ষার দিক থেকেও এর গুরুত্ব অনেক। মেলার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দেশেরর জ্ঞান, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারি এবং একই সাথে আমরা ও আমাদের জ্ঞান, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতিকে তাদের সামনে তুলে ধরতে পারি। ইহা চিত্ত বিনোদন এবঙ নব উদ্দ্যমের মাধ্যমও বটে।
উপসংহারঃ বিজ্ঞাপনের জন্য বাণিজ্য মেলা সঙবাদপত্রের চেয়ে একটি ভাল মাধ্যম। নিঃসন্দেহে কোন জিনিসের সরাসরি প্রদর্শন ঐ জিনিসটিকে অধিক চিত্তাকর্ষক করে তুলে। কাজেই দেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মংগলের জন্য প্রতিবছর বানিজ্য মেলার আয়োজন করা উচিত।
বঙ্গবন্ধুসেতু/বঙ্গবন্ধুযমুনাবহুমুখীসেতু
সূচনাঃ বাংলাদেশ একটি নদীর দেশ। বাংলাদেশের সর্বত্র শত শত নদী জালের মত ছড়িয়ে আছে। নদীগুলো বিভিন্ন পথে বাংলাদেশের বিভিন্ন মঙ্গল সাধন করে থাকে। নদীগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে যমুনা এবং বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ইতিহাসে এটা একটা মাইল ফলক হিসেবে সেবা করেছে।
সেতুরনামকরণঃ সর্ব প্রথমে এর নামকরণ করা হয় যমুনা বহুমুখী সেতু। তবে ১৯৯৭ সনে সরকারের মন্ত্রিপরিষদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক এর নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু সেতু।
সেতুরপ্রয়োজনীয়তাঃ বাংলাদেশ যমুনা নদী কর্তৃক পূর্ববঙ্গ ও উত্তর বঙ্গ নামে দুটি অংশে বিভক্ত। পরিবহন ও যোগাযোগ পদ্ধতির ক্ষেত্রে শক্তিশালী যমুনা নদী একটি বৃহৎ প্রতিবন্ধকরূপে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত এই নদী দেশব্যাপী পরিবহনের সম্ভাব্য উন্নতির ঐক্যরূপকে ব্যহত করেছে। তাই দীর্ঘ দিন ধরে যমুনা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবী জনগনের নিকট থেকে আসছিল তার তাই বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ জাতীভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
সেতুরবিভিন্নপদক্ষেপঃ এই সেতু নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রথম দাবি উথ্থাপিত হয় ১৯৬৩ সনে। ১৯৯৬ সনের জুলাই মাসে এই বিষয়ে একটি বিল উথ্থাপিত হয়। এই বিলে বলা হয়েছিল যে যমুনা নদীর উপর একটি সেতু অবশ্যই নির্মাণ করতে হবে। এই সূত্র ধরে বিদেশী বিশেষজ্ঞগণ একে একে ১৯৬৯, ১৯৭৬, এবঙ ১৯৮২ সনে জরিপ কাজ চালায়। যাই হউক,১৯৮৫ সনে এক অধ্যাদেশ বলে সেতুর নির্মাণের জন্য একটি কার্যকরি কমিটি গঠিত হয়। ১৯৯১ সনে বাংলাদেশ সরকার সেতু নির্মাণের জন্য একটি সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। তিন বছর পর এশিয়া উন্নয়ণ ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক ও জাপান সরকার ১৯৯৪ সনের অক্টোবর মাসে নির্শাণ কাজ বাস্তবে রুপদান শুরু করে। ইহা ১৯৯৮ সনের জুন মাসে সম্পন্ন হয়।
সেতুরআকৃতিঃ সেতুটি৪.৮ কিলোমিটার লম্বা এবং মূল সেতুটি ১৮.৫ মিটার চওড়া। পুলটিতে ৪৯ টি খুঁটি আছে। মোট পিলারের সংখ্যা ১২১ টি । পাইলের গড় দৈর্ঘ্য ৪৮ মিটার। পূর্ব তীরের সংযোগ সড়ক ১৬.৯২ কিলোমিটার এবং পশ্চিম তীরে ১৬.৯৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে ব্যয়ঃ সেতুটির ব্যয় খুব বেশি। এতে ব্যয় হয় ৯৬২ মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংক, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক ও জাপান প্রত্যেকে ২০০ মার্কিন ডলার দান করে আর অবশিষ্ট ৩৬২ মার্কিন ডলার বাংলাদেশ সরকার বহন করে।
সেতুটিরউদ্বোধনঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সনের তরা জুন তারিখে সেতুটি শুভ উদ্বোধন করেন।
উপসংহাঃ সেতুটি বাংলাদেশের একটি বিরাট অর্জন। আমরা আশা করছি, সেতুটি দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করবে।
এ, কে, ফজলুল হক
শের–ই–বাংলা এ. কে. ফজলুলহক
সুচনাঃ প্রত্যেক বাঙলাদেশীর কাছে এ. কে. ফজলুল হক নামটি পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন মহৎলোক এবং একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি শের-ই-বাংলা নামে পরিচিত। ’শের’ বলতে বোঝায় বাঘ। প্রকৃত পক্ষে তিনি ছিলেন এ দেশের বাঘ।
জন্মঃ এ. কে. ফজলুল হক বরিশালের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার চিতার নাম ছিল মুহম্মাদ ওয়াজেদ আলী। জনাব ওয়াজেদ আলী ছিলেন একজন খ্যাতিমান আইনজ্ঞ। এ. কে. ফজলুল হক বাড়ীতে বসে আরবী এবঙ ফার্সি ভাষা শিখেছিলেন। মাত্র । চৌদ্দ বৎসর বয়সে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা কৃতিত্বের সাথে শেষ করেছিলেন। ১৮৯৩ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এ. কে. ফজলুল হক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ ডিগ্রী অর্জন করেন।
সরকারীকাজঃ এ. কে. ফজলুল হক প্রথমে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট পদে চাকুরী নেন। এ চাকুরী তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তাই তিনি এ চাকুরী ছেড়ে দেন এবঙ কলকাতা হই কোর্টের আইনজ্ঞ হন। কৃষক এবঙ গরীবদের দুঃখ র্দূদশাগ্রস্থ অবস্থা তার দৃষ্টিকে আর্কৃষ্ট করেছিল। তিনি তাদের ভাগ্যের উন্নতি সাধন করতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন।
রাজনৈতিকজীবনঃ ফজলুর হকের রাজনৈতিক জীবন ছিল খুব সফলতাপূর্ণ। তিনি ১৯৩৭ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৩৫ সালে তিনি কলকাতা সিটি কর্পেরেশেনের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি পর্যায়ক্রমে ছিলেন প্রধান অবিভক্তা, প্রধানমন্ত্রী এবং পূর্ব বাংলার গর্ভণর। ১৯৩১ সালে তিনি লন্ডনে অনুষ্ঠিত গোল টেবিল বৈঠকে অংশ গ্রহন করেন। সংক্ষেপে বলা বাহুল্য যে, এ. কে. ফজলুল হক উপমহাদেশের রাজনীতিতে এক অগ্নিঝড়া নক্ষত্র। তিনি রৃণ সালিশি বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন।তিনি কলকাতা ইসলামী কলেজ এবং আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
উপসংহারঃ এ. কে. ফজলুল হক এ দেশের মানুষের জন্য অনেক কাজ করে গেছেন। ১৯৬২ সালের ২৭শে এপ্রিল তার দৈহিক মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তিনি তার কর্মের মাধ্যমে এখনো বেচেঁ আছেন এবং ভবিষ্যতে বেচেঁ থাকবেন।
একজন মহৎ লোকের জীবনী
হযরত মুহাম্মদ (সঃ)
হযরতমুহাম্মদ (সঃ)
সূচনাঃ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) জন্মলগ্ন পর্যন্ত আরবে ছিল অন্ধকার যুগ। ইহা ছিল শয়তান এবং উৎপীড়নের সময়কাল। সেখানে তখন কোন বৈধ সামাজিক রীতি নীতি ছিল না। আরবরা ছিল কুসংস্কারে বিশ্বাসী, মূর্খ এবং অবিশ্বাসী। তারা তাদের নৈতিক চরিত্র হারিয়ে ফেলল। আরবরা একবারে নীতিহীন হয়ে পড়ল। এ রকম এক পরিস্থিতিতে আল্লাহ সেখানে আমাদের প্রিয় মহান পুরুষ হয়রত মুহম্মদ (সঃ) কে প্রেরণ করেছিলেন দুষ্ট আরবদেরকে পূণ্যের শিক্ষা দেয়ার জন্য।
জন্মওকর্মজীবনঃ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ৫৭০ খ্রীস্টাব্দে আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) জন্মের পূর্বেই পিতাকে হারান। ছয় বৎসর বয়সে তার মাতা আমিনাও মারা যান। তখণ তার দাদা আবদুল মুত্তালিব তাকে লালন পালন করেন। দাদার মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিব তার পড়াশোনার দায়িত্ব নেন।
মানবমুক্তিরভাবনাঃ আরবরা তখন মূর্তিপুজক ছিল। তারা মদ পান করত। তারা এক অপরের সাথে ঝগড়া করত। আর ইহা বালক মুহম্মদকে কষ্ট দিত। তিনি সর্বদা এ সকল মন্দ আচরণ দূর করার জন্য চিন্তা ভাবনা করতেন।
ইসলামপ্রচারঃ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) খাদিজা নামে এক ধনাঢ্য মহিলাকে বিয়ে করেন। আর ইহাতে তার অভাব দূর হয়। এরপর তিনি আল্লাহর গভীর ধ্যানে মগ্ন হন।হীরা পর্বতের গূহায় তিনি ১৫ বছর আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকেন। চল্লিশ বৎসর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচার করলেন।
হিযরতঃ মক্কাবাসীরা হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে হত্যার পরিকল্পনা করল। যে কারণে মুহাম্মদ (সঃ) তার অনুসারীদের নিয়ে মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় গমন করেন। আর ইহাকেই হিযরত বলে। তিনি মদিনায় এক সম্রাজ্য স্থাপন করেন। মুসলিম সমাজের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা। ৬৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ৬৩ বৎসর বয়সে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) তার শেষ হজ্জব্রত পালন করেন।
উপসংহারঃ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) হলেন মুসলিম উম্মাহর মহান পুরুষ। তিনি হলেন সর্বশেষ এবং মহান পুরুষদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি দয়ালু,সত্যবাদি, উদার, নিরহংকার এবং মিষ্টভাষী। তিনি শিশুদের এবঙ সমগ্র মানব জাতিকে ভালবাসতেন।
একটি ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন
বাংলাদেশেরএকঐতিহাসিকস্থানময়নামতি
সূচনাঃ ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন কৌতুহল জনক এবং শিক্ষাপ্রদ। ইহা আমাদের মনকে গৌরবময় অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ইহা আমাদের চোখের সামনে অতীতের স্মৃতিগুলো তুলে ধরে, সম্প্রতি আমি বাংলাদেশের এক ঐতিহাসিক স্থান ময়নামতিতে ভ্রমনে গিয়েছিলাম।
ভ্রমনেরবর্ণনাঃ আমি আমার তিন বন্ধুর সাথে সায়েদাবাদ বাস স্টেশন থেকে কুমিল্লাগামী বাসে উঠলাম। আমরা সেখানে রাত ১০টার পৌছলাম । কুমিল্লা শহর থেকে স্থানটির দূরত্ব প্রায় ৬ মাইল। আমরা সেখানে বেবীটেক্সী যোগে গিয়েছিলাম। স্থানটি ছিল নির্জন। আমাদের মতো অনেক লোক আমরা দেখতে পেয়েছিলাম যারা শালবন বিহার পরিদর্শনে এসেছিল। স্থানটি অসমতল এবং চারিদিকে ছাড়ানো পাহাড়। শালবন বিহারের পুরাতন ধ্বংসাবশেষ দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। আমরা নিকটবর্তী যাদুঘরে গিয়েছিলাম । আমরা ইহার বিভিন্ন অংশে ঘুরেছিলাম এবং প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ অবলোকন করেছিলাম । আমার কাছে মনে হচ্ছিল যে আমি তখন সে যুগেই অবস্থান করছিলাম। আমি আমার অস্তিত্বের কথা ভূলেই গিয়েছিলাম । এ সকল ধ্বংসাবশেষ আমাদের মনের চোখে পুরাতন যুগের স্মৃতির ইঙ্গিত বহন করে। আমরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমন করেছিলাম এবং দর্শনীয় সকল জিনিষগুলো কৌতুহল ভরে দেখছিলাম । আমাদের কল্পনা সুদুর অতীতে ঘিরে গিয়েছিল এবং প্রবলভাবে আলোড়িত হয়েছিল । আমরা গৌরব অনুভব করছিলাম এই ভেবে যে আমাদের এ ধরনের সমৃদ্ধ সভ্যতা ছিল। তথ্য ফলক থেকে আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমরা যাদুঘরটিতে অনেক বার ঘুরলাম এবং তারপর নিকটবর্তী একটি রেস্তুরায় গিয়ে নিজেদের পুনরায় কিছুটা সতেজ করে নিলাম। আমরা ক্লান্ত অনুভব করছিলাম এবং ঢাকগামী বাসে চড়ার জন্য আমরা বাস ষ্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম।
উপসংহারঃ ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন সর্বদা শিক্ষামূলক। ইহা গৌরবময় অতীত সম্পর্কে আমাদের বাস্তব জ্ঞান দেয়। ইহা আমাদের পাঠ্যপুস্তক থেকে লব্ধ জ্ঞানকে পরিপূরক করে। ঐতহাসিক স্থান পরিদর্শনের স্মৃতিটি আজও আমার মনে সতেজ হয়ে আছে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা
বাংলাদেশ অধিকজনসংখ্যা সমস্যা
সূচনাঃ বাংলাদেশ কেবলমাত্র কয়েক বছর আগে স্বাধীনতা লাভ করল। ইহা একটি ছোট এবং উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন। কিন্তু অধিক জনসংখ্যা হল এর খুব জটিল সমস্যা। এখন ইহা একটি জাতীয় সমস্যা। এই সমস্যাটি আমাদের সকল উন্নতির ক্ষেত্রে এক অন্তরায়।
বর্তমানঅবস্থাঃ বাংলাদেশে প্রায় ১৩ কোটি লোক বাস করে। এখনও এ দেশে প্রতিদিন প্রায় ৩৬০টি নুতন শিশু জন্ম গ্রহণ করে। এভাবে যদি নুতন শিশু জন্মগ্রহণ করতে থাকে তাহলে ৩০ বছরের মধ্যে এদেশের লোক সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যাবে। কিন্তু এদেশের সম্পদ সীমিত। তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের অভাবও দিনে দিনে বাড়ছে। ইহা খাদ্য, বাসস্থান এবং বস্ত্র সমস্যার সৃষ্টি করছে। আবার ক্ষুধার্ত এবং পীড়িত শিশুরা জন শক্তিতে পরিনত হতে পারছে না। তার নিশ্চিতভাবে সমাজের জন্য বোঝা হয়ে বেড়াচ্ছে। ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্য আমদানি করতে সরকারকে প্রতি বছর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে।
সমস্যারকারণসমূহঃ এদেশের অধিকাংশ লোক মূর্খ । তারা বোঝে না কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ নয়। পক্ষান্তরে বাল্য বিবাহ, বহুবিবাহ প্রথা এবং বঙ্গোপসাগর থেকে সর্বত্র প্রবাহিত মৌসুমী বায়ূ অধিক জনসংখ্যার কারণ। এগুলো ছাড়াও উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা সুবিধার কারণে মৃত্যুর হার হ্রাস পাচ্ছে। যে কারণে আমাদের দেশের লোকসংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যাবে। আর তখন ইহা হবে বিপদজনক।
সমস্যারসমাধানঃ এ সমস্যা প্রতিরোধের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদেরকে জন্মের হারও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বহু বিবাহ প্রথা এবং বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে হবে। সর্বোপরি, আমাদেরকে ধর্মীয় কুসংস্কার ত্যাগ করতে হবে।
উপসংহারঃ জন্মহার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিৎ। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অধিক জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন অবস্থান ও পরিবেশ সম্পর্কে শিক্ষা নিতে হবে। যদি এখনও জনসংখ্যার এই উদ্বেগজনক বৃদ্ধি রোধের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে জাতির জন্য ভবিষ্যৎ হবে খুবই অন্ধকার।
আমাদের দেশ
বাংলাদেশ
সূচনাঃ আমাদের দেশের নাম বাংলাদেশ। সবুজ মাঠ এবং অসংখ্য গাছপালায় ভরপুর বাংলাদেশ বিশ্বের সুন্দরতম দেশগুলোর অন্যতম। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতার জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ লোক তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিল।
অবস্থানএবংআয়তনঃ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাংশে অবস্থিত। ইহা দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর পূর্বে ভারত ও মায়ানমার এর সীমানা এবং পশ্চিম ও উত্তরে শুধু ভারতের সীমানা দ্বারা বেষ্টিত । নদীসহ এর মোট আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার ।
জনসংখ্যাঃ বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ কিন্তু এর জনসংখ্যা অধিক। আমাদের দেশের বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি । এই লোকসংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
প্রধানপ্রধাননদীসমূহঃ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ দেশের শত শত ছোট বড় নদীগুলো জালের মত ছড়ানো। এ দেশের বড় বড় নদীগুলোর মধ্যে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র এবং কর্ণফুলী উল্লেখযোগ্য।
প্রধানশস্যএবংফলঃ বাংলাদেশের মাটি খুব উর্বর। ইহা প্রচুর পরিমানে বৃষ্টির পানি এবং সূর্যের আলো পায়। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমানে ধান, পাট, আখ এবং চা জন্মে। বাংলাদেশে নানা জাতের ফলও জন্মে। ইহাদের মধ্যে কাঁঠাল, আম, কলা, আনারস, পেয়ারা প্রভৃতি ফল অধিক বিখ্যাত।
বিশিষ্টকবিঃ বাংলাদেশে অনেক কবি আছেন। কাজী নজরুল ইসলাম হলেন বাংলাদেশের জাতীয় কবি যিনি অনেক বছর আগে মারা গেছেন। জসিমউদ্দিনও একজন বিখ্যাত কবি ছিলেন। কবি সুফিয়া কামাল এবং সামছুর রহমান হলেন অধিক বিখ্যাত।
প্রাকৃতিকসৌন্দর্যঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই মনোমুগ্ধকর। সুন্দরবন, রাঙ্গামাটি এবং সিলেটের চা বাগানগুলো খুবই চিত্তাকর্ষক। কক্সবাজারের সবুজে ঘেরা সমুদ্র তীর দেখতে খুবই চমৎকার। একে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্রতীর বলা হয়।
উপসংহারঃ বাংদেশ একটি সুন্দর দেশ কিন্তু অধিকাংশ লোক দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে। তারা কাঠোর পরিশ্রম করে। তবুও তারা পর্যাপ্ত খাবার খেতে পায় না। অধিকন্ত আমাদের সরকার দারিদ্রতা বিমোচনের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করেছেন। আমরা আশাকরি যে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আমাদের দেশ ক্ষুধা এবং দারিদ্র মুক্ত হবে।
বাংলাদেশের ঘুর্নিঝড়
ঘুর্ণিঝড়
সূচনাঃ বাংলাদেশ প্রায় প্রতি বছর ঘূর্নিঝড়ে আক্রান্ত হয়। আর ইহার কারণ হচ্ছে এর ভৌগলিক অবস্থান। বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ উপরের দিকে চলিত হয় এবং ইহা বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানে।
কারণঃপ্রথমে সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। সূর্যের গরম রশ্মি সাগরের উপরিভাগে পড়ে। কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাতাস হাল্কা হয়ে উপরে উঠে যায়। আর তখন চারিপার্শ্বের ভাড়ী ঠান্ডা বাতাস এসে ঐ খালি জায়গাটা দখল করে। এভাবে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এই নিম্নচাপ গতি সঞ্চার করে এক প্রবল বেগে সম্মুখে উত্তর পূর্ব দিকে ধাবিত হয়। বায়ু তখন প্রচন্ড বেগে প্রবাহিত হয়। সাগরের ঢেউ উত্তাল হয়ে ওঠে। আর এভাবে ঘুর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয় এবং স্থলভাগে প্রচন্ডভাবে আঘাত হানে।
১৯৯১সালেরঘুর্ণিঝড়ঃ ১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল চট্রগ্রাম এবং তৎসংলগ্ন এলাকা দিয়ে এক প্রচন্ড ঘুর্নিঝড় বয়ে গিয়েছিল। আমাদের দেখা এ যাবৎ পর্যন্ত ঘুর্নিঝড়ের মধ্যে ইহা ছিল সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী। কয়েক দিনের জণ্য সেখানে অসহনীয় গরম ছিল। আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন এবং ভারী গাছগুলোকে বিমর্ষ মনে হচ্ছিল। ইহা ছিল সোমবার। রাত ৯টার দিকে দমকা বাতাস প্রবাহিত শুরু করল। বজ্রপাতের প্রচন্ড গর্জন মনে হচ্ছিল। রাত ১২টার দিকে ঘুর্নিঝড় ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে শুরু করল। ইহা আনুমানিক প্রায় চার ঘন্টা স্থায়ী হয়েছিল। পরবর্তী দিন সকাল নয়টার দিকে ঘুর্ণিঝড় সম্পূর্ণভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছিল।
১৯৯১সালেরঘুর্নিঝড়পরবর্তীফলঃ ১৯৯১ সালের ঘুর্নিঝড় পরবর্তী ফল ছিল ব্যাপক। গাছপালা এবং ঘর-বাড়ি বাদামের খোসার মতো উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। চট্রগ্রামে অনেক জাহাজ স্থল ভাগের অনেক ভিতরে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। গবাদি পশু এবং ধন সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। প্রায় ৫ লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল।
উপসংহারঃ সমূদ্র তীরবর্তী এলাকায় ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে। ঘুর্ণিঝড় সতর্কীকরণ ব্যবস্থারও আধুনিকীকরণ করতে হবে।
আমাদের স্কুল গ্রন্থাগার
গ্রন্থাগার
সূচনাঃ গ্রন্থাগার জ্ঞানের ভান্ডার। ইহা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের গ্রন্থাগার প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারণ ছাত্রদের জন্য নির্দেশিত পাঠ্য পুস্তকের জ্ঞান গ্রন্থাগার থেকে সরবরাহকৃত বই পড়ে পরিপূরক হতে পারে। তাই আমাদের স্কুলেও একটি গ্রন্থাগার আছে।
গ্রন্হাগারেরবর্ণনাঃ আমাদের স্কুলের গ্রন্থাগারটি আকারে বেশ বড়। এর দুইটি অংশ আছে । এর এক অংশে রয়েছে পড়ার কক্ষ। পড়ার কক্ষে বই সরবরাহের জন্য একটি টেবিল আছে। গ্রন্থাগারের অপর অংশে অনেক আলমারি রয়েছে। এগুলোতে বই সারিবন্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের গন্থাগারটি হচ্ছে একটি দ্বিতল বিশিষ্ট আধুনিক দালান। ইহাকে গ্রন্থাগার ভবন বলা হয়। এটি আমাদের বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের পার্শ্বে অবস্থিত।
বইয়েরসংখ্যাএবংপ্রকারভেদঃ আমাদের স্কুলের গ্রন্থাগারটি খুব সমৃদ্ধ। ইহাতে প্রায় ছয় হাজার বই আছে। ইহা বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন প্রকার দরকারী বই রাখে। ইহা উপন্যাস, নাটক, গল্পের বই এবং আত্মজীবনীমূলক বই প্রভূতি রাখে। মানবিক, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য বিভাগের বিভিন্ন বই এর সংগ্রহে আছে। শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য গ্রন্থাগারের নির্দেশনামূলক বইও রয়েছে।
বইনেয়ারপদ্ধতিঃ একজন গ্রন্থাগারিক এবং তার একজন সহকারী দ্বারা গ্রন্থাগারিট সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বই ধার নেয়ার জন্য লাইব্রেরী কার্ড জমা দিতে হয়। সহকারী গ্রন্থাগারিক নির্দিষ্ট বইগুলো খূঁজে বের করেন এবং সেগুলো ছাত্রদের সরবরাহ করেন। ছাত্রদেরকে শুধুমাত্র এক সপ্তাহ বই রাড়ীতে রাখার অনুমতি দেয়া হয়। শিক্ষকরা নির্দেশনামূলক বইগুলো ধার নিতে পারেন। কিন্তু ছাত্রদের নির্দেশনামূলক বই ধার নেওয়ার অনুমতি দেয়া হয় না। তার সে বইগুলো শুধু স্কুলের পড়ার কক্ষে বসে পড়তে পারে।
কতটাউপকারীঃ আমাদের বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি আমাদের খুব উপকার করে। আমরা ইহা থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সুবিধা পাই। যখন আমরা গ্রন্থাগারের বই পড়ি তখন আমরা ইহা থেকে প্রত্যক্ষ সুবিধা পাই।
উপসংহাঃ আমাদের বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি আমাদেরকে খুব আকৃষ্ট করে কারণ ইহা লেখাপড়া এবং শিক্ষার জন্য একটি পবিত্র স্থান। আমাদের বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটির জন্য আমরা সত্যিকারের জন্য আমরা সত্যিকারভাবে গর্বিত।
বাংলাদেশের বন্যা
একটপ্রাকৃতিকদুর্যোগ/বন্যা
সূচনাঃ বন্যা একট প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বর্তমানে বন্যা বাংলাদেশে একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতি বছর বন্যার কবলে পড়ে ।
বন্যাকিঃ ভারী বর্ষন বা অন্য কারণে যখন নদী বা খালের কিনারা উপছিয়ে পানি প্রবাহিত হয় এবং গ্রাম ও শহর ভাসিয়ে নিয়ে যায় তখন তাকে বন্যা বলে।
বন্যারকারণঃ বন্যার কারণ বিবিধ। প্রধানত: অতি বর্ষনের কারণে বন্যা হয়। সাইক্লোন, জলোচ্ছাস বা পাহাড়ের উপরস্থ তুষার গলার ফলেও বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশেরবন্যাঃ প্রায় প্রতি বছরই আমাদের দশে বন্যা হয়। ১৯৫৪, ১৯৬০, ১৯৭৪ ১৯৮৪ এবং সালের সংঘটিত বন্যা ছিল ভয়ংকর। ১৯৮৮ এবং ১৯৯৮ সালের বন্যা ছিল নজিরবিহী্ । ইহা অতীতের সকল ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে। ইহা বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ এলাকাকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর প্রভূতি শহর এলাকা গুলোতেও ইহা গ্রাস করেছে আর তখন জনসাধারনের দুঃখ দুর্দাশার কোন সীমা ছিল না।
বন্যারফলেক্ষতিঃ বন্যা জীবন, সম্পদ এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। ইহা গ্রাম, রাস্তাঘাট এবং এমনকি ঘরবাড়ী ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অনেক মানুষের জীবন হানি ঘটে। সকল ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। আর তখন তারা উঁচু রাস্তা, স্কুল এবং কলেজে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
বন্যারপরবর্তীফলঃ বন্যার পরবর্তী ফল খুবই ভয়ান। বন্যার পরবর্তীতে মহামারী এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। বন্যায় দূর্গত এলাকা কর্মমাক্ত এবং অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে। বিশুদ্ধ পানির যথেষ্ট অভাব দেখা দেয়। দৈনন্দিন জীবনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম বেড়ে যায়।
সুবিধাঃ বন্যা আমাদের উপকারও করে থাকে। ইহা আমাদের জমিকে উর্বর করে। ইহা ময়লা আবর্জনা ধুয়ে নিয়ে যায়।
ত্রানঃবন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকদেরকে যথাযথভাবে ত্রান সামগ্রী দেয়া উচিত। তাদেরকে পূনর্বাসন করা উচিত। তাহাদেরকে সহজ কিস্তিতে ধান এবং বীঝ সরবরাহ করা উচিত।
বন্যানিয়ন্ত্রণেরব্যবস্থা /প্রতিকারঃ আমাদের দশের বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরী ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন । দীর্ঘ মেয়াদী বা স্বল্প মেয়াদী উভয় ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। অধিক পানি বহনের জন্য আমাদের নদী গর্ভস্থিত সঞ্চিত পলি খনন করতে হবে। নদীর কিনারা দিয়ে যথোপযুক্ত বাধ নির্মাণ করতে হবে।
উপসংহারঃ প্রতি বছর বন্যা আমাদের দেশের প্রচুর ক্ষতি সাধন করে। তাই যে কোন উপায়ে হোক আমাদের অবশ্যই বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ঢাকা শহর
বাংলাদেশেররাজধানী/ ঢাকা
সূচনাঃ ঢাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। ইহা বাংলাদেশের রাজধানী শহর। আমি ঢাকা শহরে বাস করি।
অবস্থানঃ ঢাকা শহর বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। ইহা প্রায় দশ মাইল দীর্ঘ এবং তিন মাইল প্রশস্ত। এ শহরের লোক সংখ্যা প্রায় এক কোটি। শহরটি দুটি অংশে বিভক্ত- পুরাতন শহর এবং নুতন শহর। নুতন শহরের রাস্তাঘাট এবং ঘরবাড়ী পুরাতন শহরের চেয়ে বড় এবং সুন্দর।
ইতিহাসঃ সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ইসলাম খান কর্তৃক ঢাকা শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর থেকে ইহা ছিল বাংলার রাজধানী। তাই সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামানুসারে ইহাকে জাহাঙ্গীরও বলা হতো।
গুরুত্বপূর্ণভবনঃ ঢাকাতে ভবন এবং মসজিদের শহর বলা হয়। এখানে ভবন, মসজিদ, মন্দির এবং গীর্জা আছে। লালবাগ দূর্গ আমাদেরকে ঢাকার অতীত গৌরব স্বরণ করিয়ে দেয়। এছাড়াও বঙ্গভবন, হাই কোর্ট, সুপ্রীম কোট, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, বাইতুল মোকাররম, মিরপুর চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, গণভবণ, সংসদ ভবন, প্রধান ডাকঘর, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা রেলওয়ে ষ্টেশন প্রভূতি দেখার জন্য উল্লেখযোগ্য।
যোগাযোগঃ ঢাকা শহর ট্রেন, বাস এবং লঞ্চ যোগাযোগের মাধ্যমে সকল জেলা শহরের সাথে সংযুক্ত । দেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং বিশ্বের সাথে ঢাকা শহরের বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে।
শিক্ষাকেন্দ্রঃ ঢাকা হচ্ছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিক্ষা কেন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরী শিক্ষা কলেজ, জগন্নাথ কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারী ইসলামিয়া কলেজ এবং আরো অনেক বা আধা সরকারী স্কুল কলেজ হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রদান করে থাকে।
ব্যবসাঃ ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো টংগী, তেজগাও এবং মিরপুরে অবস্থিত। এ শহরে কিছু সংখ্যক ক্ষুদ্র শিল্প কারখানাও আছে ।
উপসংহারঃ ঢাকা একটি পুরাতন এবং জনবহুল শহর। অনেক সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপের জন্য শহরটি বিখ্যাত। এখন ইহা বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর অন্যতম। শহরটি বর্তমান অবস্থার উন্নতির জন্য কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদেক্ষেপ নেয়া উচিত ।
বাংলাদেশের বসন্তকাল
বসন্তকাল
সূচনাঃ বসন্তকাল সকল ঋতুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ইহা সকল ঋতুর মধ্যে সর্বোত্তম, চমৎকার এবং অধিক সুন্দর। বিভিন্ন দেশের কবিরা বসন্তকালের প্রসংসা করে গান গেয়েছেন। শীতের পরে বসন্তের আগমন ঘটে এবং ইহা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বসন্তকালে প্রকৃতি এবং মানুষ নুতন জীবন ফিরে পায়। আর এজন্য আমি বসন্তকে অধিক পছন্দ করি।
বর্ণনাঃ শীতকালে গাছের পাতা বিদীর্ণ হয়ে যায় এবং ঝড়ে পড়ে। মাঠগুলো শক্ত হয়ে যায় এবং সবুজ রং বিবর্জিত হয় পড়ে। বসন্তকালে প্রচুর পরিমানে ফুল ফোটে । প্রকৃতি চমৎকার রূপ ধারণ করে। বসন্তের সৌন্দর্যে পৃথিবী হাসে । কোকিলসহ নানা জাতের গানের পাখি সানন্দে গান গায় । মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে ব্যস্ত থাকে এবং কৃষকেরা তাদের শস্য সংগ্রহ হতে মুক্ত থাকে। তাদের আত্মীয় স্বজনেরা এক বছরান্তে তাদের পিতামাতার বাড়ীতে বেড়াতে যায়। এই সুন্দর ঋতুতে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। গ্রাম্য ছেলে মেয়েরা ধানের মাঠে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করে এবং বড়রা গল্প করে রাত্র উপভোগ করে। বসন্তকালে ধানের ক্ষেতে যাত্রা, গ্রাম্য মেলা, গরুর দৌড় এবং পালগান অনুষ্ঠিত হয়।
মৌসুমীফসলঃ এই ঋতুতে সরিষা, পাট এবং রোরো ধানের বীজ বপন করা হয়। এ সময়ে মিষ্টি জাতীয় ফল পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যায়। বিভিন্ন জাতের শাকসবজি এবং মাছ সস্তায় বিক্রি হয়।
স্থায়িত্বঃ এই ঋতুটির স্থায়িত্ব খুব কম সময়। কখন ঋতুটি শেষ হয়ে যায় তা আমরা অনুভব করতে পারি না বললেই চলে। কারণ ইহার স্থায়িত্ব স্বল্প সময়ের জন্য এবং সবাই এই ঋতুর আগমন দীর্ঘ আগ্রহের সাথে কামনা করে।
গানেরমৌসুমঃ বসন্তকালে সারাদিন মৃদু বাতাস প্রবাহিত হয়। নদীতে ছোট ছোট ঢেউয়ের কল কল ধ্বনি শোনা যায়। গানের পাখিরা সারাদিন মিষ্টি সুরে গান গায়। মৌমাছি গুনগুন শব্দ করে, মাঝি এবং রাখালেরা মিষ্টি গান গায়। প্রজাপতি ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়।
উপসংহারঃ বসন্তকাল সব ঋতুর মধ্যে অধিক সুন্দর এবং চমৎকার । আমাদের উচিৎ এই ঋতুকে যথাযথ কাজে লাগানো।
বাংলাদেশের বর্ষাকাল
বর্ষাকাল
সূচনাঃ বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ। প্রত্যেকটি ঋতু মোটামুটি দুই মাস নিয়ে গঠিত। আষাঢ় এবং শ্রাবণ মাসকে বর্ষাকাল বলা হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে বাংলাদেশের বর্ষাকাল আশ্বিণ পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়।
বর্ননাঃ বর্ষাকালে আকাশ ভয়ানক দেখায়। বৃষ্টিযুক্ত ভারী কালো মেঘ আকাশে ঘুরে বেড়ায়। এ মেঘগুলো পৃথিবীর উপরি পৃষ্ট থেকে খুব কাছে অবস্থান করে। প্রচন্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়। সূর্য দিনের পর দিন মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এবং মাঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি হয়। কখনও কখনও কয়েকদিন স্থায়ী হয়। নদী, জলাশয় এবং ডোবা সবগুলো পানিতে পূর্ণ হয়ে যায়। নদীর পানি ঘোলা হয়ে যায় এবং কিনারা উপছিয়ে প্রবাহিত হয় এবং তখন মাঠগুলোকে বিশাল সমুদ্র বলে মনে হয়। গ্রামের লোকদের তখন নৌকায় চলাফেরা করতে হয়। স্থল ভাগের দৃশ্যগুলো তখন সবুজ দেখায়। পাখিরা যেমন সারস এবং বক ছোট মাছের সন্ধানে নীরবে পানিতে দাঁড়িয়ে থাকে। জলচর পাখিরা মাছ শিকারের জন্য পানিতে ভেষে বেড়ায়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নৌকায় চড়ে মাছ শিকারে যায় এবং পানিতে কাগজের নৌকা ভাসায়।
এরকারণঃ মৌসুমী বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প বহন করে আমাদের দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয় যখন ইহা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে। তারপর এই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয় তখন ইহা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে। তারপর এই জলীয় বাষ্প মেঘে পরিনত হয় এবং কয়েক দিনের জন্য বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং আমরা ইহাকে বর্ষাকাল বলি।
এরগুরুত্বঃ বর্ষাকাল আমাদের দেশের জন্য এক আর্শীবাদ। বৃষ্টি আবহাওয়াকে বিশূদ্ধ করে এবং ভূপৃষ্ঠের উপরিস্থত আবর্জনা ধুয়ে নিয়ে যায়। দিনের তাপমাত্রা কমে যায়। কৃষকেরা মাঠের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তারা তাদের জমি চাষ করে এবং বীজ বপন করে।
ফলাফলঃ বাংলাদেশে বর্ষাকাল বিভিন্ন অসুবিধার সৃষ্টি করে। দিনের পর দিন অতি বর্ষন আধাপাঁকা রাস্তাগুলোকে কর্দমাক্ত করে তোলে। কৃষকেরা এবং দিন মজুরেরা কাজের জন্য বাহিরে যেতে পারে না। কাজেই তাদেরকে মাঝে মধ্যে অনাহারে থাকতে হয়। ক্রীড়া এবং বাহিরের কাজকর্ম অসম্ভব হয়ে পড়ে। জীবন বিষাদময় হয়ে উঠে। গ্রাম অঞ্চলে ম্যালেরিয়া, কলেরা এবং আমাশয় রোগ ছড়াইয়া পড়ে। সাপ তখন তাদের গর্তে বাস করতে পারে না। তাই তারা ঘন বসতিপূর্ণ উঁচু এলাকায় চলে আসে এবং কখনও কখনও মানুষ কামড়ায়। কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি বন্যার সৃষ্টি করে। বন্যায় ফসল ভেসে যায়। গবাদি পশু মারা যায় এবং গরীব মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
উপসংহারঃ অসুবিধা সত্বেও বর্ষাকাল বাংলাদেশের মঙ্গল করে।
বাংলাদেশের ফল
ফল
সূচনাঃ ফল আল্লাহর এক বিস্ময়কর দান। ফল সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। সকল মানুষ, শিশুরা অথবা পূর্ণবয়স্ক লোকেরা সমভাবে ফলকে পছন্দ করে। বাংলাদেশ হচ্ছে ফলের একটা বাগান স্বরূপ। বিভিন্ন জাতের এবং বিভিন্ন বিশেষ সময়ের ফল আমাদের দেশে জন্মে। জন্মানুসারে আমাদের দেশের ফলকে সকল মৌসুমের ফল এবং কোন বিশেষ সময়ের ফল এ দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
মৌসুমীফলাদিঃ গ্রীষ্মকালীন অনেক ফল আছে। এগুলো রসালো এবং সুস্বাদু। এগুলোর মধ্যে কিছু ফল মিষ্টি এবং কিছূ ফল টক। এ ফলগুলোর মধ্যে আমকে বলা হয় রাজা। আম বিভিন্ন জাতের হয়। ল্যাংরা, ফজলী, গোপালভোগ এবং মোহনভোগ হচ্ছে উৎকৃষ্ট ধরণের আম। কাঠাঁল আমাদের জাতীয় ফল। এটি অমসৃন আকৃতির একটি অতি পরিচিত সাধারণ ফল। ইহা খেতে খুব সুস্বাদু। পেয়ারা, জাম, লিচু এবং কুল আকারে খুবই ছোট ফল। এ ফলগুলো শিশুদের কাছে খুবই প্রিয়। তরমুজ, তেতুল, বাতাবী, আপেল, আনারস এবং লেবু খুব রসালো ফল।
সব ঋতুর ফলঃ কলা, পেঁপে এবং নারিকেল হল সব ঋতুর ফল। এগুলো সারা বছর জম্নে। কলা এ ফলগুলোর মধ্যে অতি পরিচিত। কলা বিভিন্ন জাতের হয় যেমন সবরী, কবরী, চম্পা, সাগর প্রভৃতি। সকল জাতের কলার মধ্যে সবরী কলা উত্তম। সাগর কলা আকৃতিতে সবচেয়ে বড়। নরসিংদি এবং রামপালের সাগর কলা খুব বিখ্যাত কলা। পরবর্তী অতি পরিচিত ফল হলো কলা এবং পেঁপে অসু্স্থ্য লোকের খাদ্য হিসেবে এবং কাঁচা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নারিকেল দিয়ে অনেক মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরী হয়। খুব ভাল তৈলো ইহা দিয়া তৈরী হয়। ইহা সোফা তৈরী করতে ব্যবহৃত হয়।
উপকারিতাঃ সলক বয়সের মানুষ বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য ফল খুবই উপকারী। সব ধরনের ফলই পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। অনেক ফলই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় । কাজেই আমাদের উচিৎ আমাদের দেশে অধিক ফল জন্মানো।
উপসংহারঃ ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু আমরা ফলের ব্যাপারে খুব যত্নবান নই।
বাংলাদেশের ফুল
ফুল
সূচনাঃ ফুল সৌন্দর্যের প্রতিক। ইহা আল্লাহর একটি সর্বোৎকৃষ্ট সুন্দর সৃষ্টি। এটি শুধু প্রতৃদির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না বরং সব কিছুরই সৌন্দর্য বাড়ায়। কাজেই সবাই ফুলকে অধিক পছন্দ করে।
কোথায়ওকখনজন্মেঃ বাংলাদেশ ফুলে সমৃদ্ধ। এদেশে বিভিন্ন ধরনের ফুল ফুটে এবং সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে। বসন্ত কালে এদেশের ঝোপ এবং বাগানগুলো নানা রঙের ফুলে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। অন্যান্য ঋতু গুলোতেও বিশেষ ধরনের ফুলের সমারোহ ঘটে।
ফুলেরশ্রেণীবিভাগঃ হাসনাহেনা, বেলী, গন্ধরাজ, চামেলী, কবরী, জুঁই এবং মালতীফুল জনপ্রিয় ফুলগুলোর অন্যতম। এ ফুলগুলো তাদের মিষ্টি সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। কসমস, ডালিয়া এবং অন্যান্য কোন বিশেষ সময়ের ফুলগুলো শীতকালে আমাদের বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এগুলো ছাড়াও বাংলাদেশের বনগুলোতে প্রচুর ফুল দেখতে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কিছু কিছু ফুল দেখতে খুবই সুন্দর। এ ফুলগুলোর মধ্যে কৃঞ্চচুড়া সবচেয়ে বেশি সুন্দর। কিছু কিছু ফুল সুন্দর এবং সুগন্ধিো বটে। কিছু কিছু ফুল শুধু দেখতে সুন্দর কিন্তু তাদরে কোন সুগন্ধ নেই । তথাপিও সবাই সব ফুলকে পছন্দ করে।
ফুলধরাঃ গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। এটি সকল রঙের এবং গন্ধের ফুলের মধ্যে উৎকৃষ্ট। পদ্ম এবং গাদা অতি পরিচিত সাধারণ ফুল। এগুলো নানা জাতের হয়ে থাকে। সূর্যমুখী ফুল দেখতে সুন্দর। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আকৃতির সূর্যমুখী ফুল দেখতে সুন্দর। বিভিন্ন আকৃতির সূর্যমুখী ফুল দেখতে পাওয়া যায়।
উপসংহারঃ বাংলাদেশ ফুলে ভরপুর। যেখানেই দৃষ্টিপাত করি সেখানেই আমরা কোন না কোন ফুল দেখতে পাই।
ডাক পিয়ন
ডাকপিয়ন
সূচনাঃ ডাক পিয়ন হল নিম্ন বেতনভূক্ত সরকারী কর্মচারী। তিনি ডাক অফিসে কাজ করেন। শহর এবং গ্রামের সকল মানুষের কাছে তিনি সুপরিচিত। তিনি হলেন সাধারন লোকের ঘনিষ্ট বন্ধু ।
তারপোষাকঃ তিনি খাকি পোশাক পরিধান করেন। তাহার মাথায় টুপি থাকে। তিনি কাঁধ বরাবর আড়াআড়ি একটা ব্যাগ বহন করেন। টাকা এবং অনান্য মূল্যবান জিনিস তিনি এ ব্যাগের মধ্যে রাখেন। মাঝে মাঝে তিনি সাইকেলে চড়ে চলাফেরা করেন।
তারকাজঃ ডাক পিয়নকে অনেক কাজ করতে হয়। তার দৈনন্দিন কাজ সকাল থেকে শুরু হয়। প্রথমে তিনি ডাক অফিসে যান। তিনি প্রাপকদের কাছে চিঠি , মানি আর্ডার এবং অন্যান্য অপরিহার্য জিনিষ বিতরণ করেন। গ্রামাঞ্চলে তিনি পোস্ট কার্ড এবং খাম বিক্রি করেন। তাহার দায়িত্ব যথাসময়ে শেষ করার জন্য তাকে অনেক পথ হাঁটতে হয়।
তারজীবনঃ ডাক পিয়নের কর্মজীবন সহজতর নয়। তাহার কাজকর্ম খুব দায়িত্বপূর্ণ । তাহাকে দায়িত্ব পালনে নিয়মানুবর্তী হতে হয়। তাকে ব্যস্ত অধ্যবসায়ী এবং দায়িত্বপূর্ণ জীবন যাপন করতে হয়। তাহার দায়িত্ব যথাসময়ে পালনের ব্যর্থতা জনসাধারণের অনেক লোকসান বা ক্ষতির সৃষ্টি করতে পারে।
ডাকপিয়নেরগুনাবলীঃ একজন ডাক পিয়নের অনেক গুনাবলী থাকে। তিনি সব সময় দায়িত্ববান এবং আন্তরিক। তিনি তার দায়িত্বের ব্যাপারে নিয়মানুবর্তী, সৎ এবং সচেতন। তিনি হলেন নীরব সেবার প্রতীক। ডাক পিয়ন আমাদের খুব উপকারি সেকব। তাহার সেবা ব্যতিত আমরা চলতে পারি না। তিনি আমাদের দেশ বিদেশের খরব পৌছে দেন। আমরা তার আগমনের আশায় আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করি।
উপসংহারঃ ডাক পিয়ন সামান্য বেতন পান। কিন্তু তাহার কাজ কর্ম খুবই দায়িত্বপূর্ণ। কাজেই তাকে ভাল বেতন দেয়া উচিৎ যাতে করে সে তার দায়িত্ব মনোযোগ সহকারে যথাযথভাবে পালন করতে পারে।
আমারপ্রিয়কবি
সূচনাঃ পশ্চিম বঙ্গে বর্ধমান নামে একটি জেলা আছে। কাজী নজরুল ইসলাম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৩০৬ খ্রীস্টাব্দের জৈষ্ঠ্য মাসে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতার নাম ছিল জায়েদা খাতুন। শৈশব কালে তাকে দুখুমিয়া নামে ডাকা হত। তিনি আমার প্রিয় কবি।
শৈশবজীবনঃ নজরুল ইসরাম তার গ্রামের একটি মক্তবের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছিলেন মেধাবী ছাত্র। কিন্তু তিনি ছিলেন দুষ্ট প্রকৃতির । যখন তার বয়স ছিল এগার বছর তখন তিনি মক্তবের লেখাপড়া শেষ করেন। অতপর তিনি ঐ মক্তবে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন । আর এ সময়েই তার পিতা মারা যান এবং তিনি ইন্টিনারেট নাট্য দলে যোগদান করেন। দলের জন্য তিনি অনেক নাটক এবং গান লিখেন। যখন দশম শ্রেণীতে পড়ছিলেন তখন তিনি সেনা বহিনীতে যোগদান করেন এবং হাবিলদার হন। সেনা বাহিনীর প্রধান দফতর থেকে তিনি কলকাতা পত্রিকার পত্রিকায় প্রকাশের জন্য অনেক কবিতা এবং ছোট গল্প পাঠান।
প্রথমবিশ্বযুদ্ধঃ প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর তিনি কলকাতা ফিরে আসেন এবং সেখানে বসবাস কতে শুরু করেন। তিনি বিদ্রোহী নমে একটি কবিতা লিখেন। এই কবিতাটিই তাকে খ্যাতি এনে দেয়। এ কবিতাটির জন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছিল । ব্রিটিশ শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তিনি অনেক কবিতা লিখেছিলেন। কবিতা লেখার দায়ে তিনি অনেকবার ক্ষমতাসীন শাসক গোষ্ঠীর দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছিলেন।
কবিহিসেবেঃ তিনি ছিলেন সমভাবে বহু বিষয়ে পন্ডিত। প্রায় বিশ বছর তিনি কবিতা, উপন্যাস, ছোট গল্প, নাটক এবং গান রচনা করেন। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা। তার কিছু বিখ্যাত বই হল অগ্নিবীনা, বিষের বাশি, চক্রবাক, সিন্ধু হিল্লোল, ব্যাথার দান, আলেয়া প্রভূতি। তাহার সকল কবিতা বিদ্রোহী চেতনায় পূর্ণ। তিনি সব ধরণের অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেন। তিনি একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ছিলেন।
উপসংহারঃনজরুল ইসলাম আজ আর আমাদের মাঝে নেই। আমাদের জাতীয় কবি হিসেবে তিনি খুবই সম্মানিত। নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট ঢাকায় পরলোক গমন করেন। বাঙ্গালী জাতির কাছে তিনি চিরদিন স্বরণীয় হয়ে থাকবেন।
মজার যে লোকের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল
গ্রাম্যডাক্তার
সূচনাঃ গ্রাম্য ডাক্তার গ্রামের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি । তিনি গ্রামের সকল পুরুষ মহিলার কাছে সুপরিচিত এবং অধিক সম্মানিত ব্যক্তি গরীব গ্রাম্য লোকদের তিনি চিকিৎসা সেবা দেন। সাধারনত একজন গ্রাম্য ডাক্তার যোগ্য ডাক্তার নন । এখনও কিছু কিছু গ্রাম্য ডাক্তার আছেন যারা মেডিকেলের অধীনে কাজ করেন এবং ঔষধ সম্পর্কে কিছু জ্ঞান অর্জন করেন।
একজনগ্রাম্যডাক্তারেরপ্রাত্যাহিকজীবনঃ একজন গ্রাম্য ডাক্তারের বাড়ীতে একটি ঔষধালয় থাকে। আর সেখানে একটি বা দুইটি আলমারিতে ঔষধ মজুদ করা থাকে। তার নিজের ব্যবহারের জন্য সেখানে একটি চেয়ার ও একটি টেবিল এবং রোগীদের বসার জন্য একটি বেঞ্চ থাকে । রোগীরা খুব সকালে তার বাড়ীতে আসে। তিনি কোন কম্পাউন্ডারের সাহায্য নেন না। অপেক্ষমান রোগীদের তিনি ঔষধের ব্যবস্থা করেন এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করেন। উপস্থিত রোগীদের প্রস্থানের পর তিনি বাইরের যে সব বাড়ীতে ডাক পরে সেখানে রোগী দেখতে যান। দুরে যাওয়ার জন্য তার হয়তোবা একটি বাই সাইকেল থাকে । তার পারিশ্রমিক কম এবং রোগী যদি গরীব হয় তাহলে তাদের তিনি বিনা পরিশ্রমিকে চিকিৎসা সেবা দেন।
একজনগ্রাম্যডাক্তারেরদায়িত্বঃ একজন গ্রাম্য ডাক্তার তার রোগীদের বিশেষভাবে যত্ন নেন। মাঝে মাঝে তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা তার রোগীর পাশে একত্রে বসে থাকেন এবং সতর্কতার সাথে রোগীর অসুখ নিয়ে গবেষনা করেন। মাঝে মধ্যে কোন মরাত্নক অসুখের ক্ষেত্রে তিনি তার রোগীর কাছে সারারাত ধরে বসে থাকেন এবং রোগীকে ঔষধ দেন। তিনি গ্রামবাসীদের উত্তম বন্ধু।
উপসংহারঃ গ্রাম্য ডাক্তার চাল চললে অতি সাদাসিদে। সবাই তাকে ভালবাসে এবং সম্মান করে। শুধুমাত্র গরীব লোক নয় ধনীরাও তার সাথে বিনয়ী আচরণ করে। আমাদের জনপ্রিয় সরকার যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রাম্য ডাক্তারদের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন।
রেল ভ্রমণ
রেলভ্রমণে
সূচনাঃ বিগত গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি এক আনন্দ ঘন ভ্রমণ করেছিলাম। আমি এক মনোহর রেল ভ্রমণে গিয়েছিলাম।
কোথাথেকেওকখনযাত্রাশুরুহলঃ তখন ছিল গ্রীষ্মের ছূটি। আমার বড় ভাই এবং আমি সকাল ৮টায় ফেঞ্চুগঞ্জের উদ্দেশ্যে ঢাকা ষ্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। ঠিক ১৫ মিনিট পূর্বে আমরা ষ্টেশনে পৌঁছেছিলাম ইতিমধ্যে ঘন্টাধ্বনি বেজে উঠল । রেলগাড়ির গার্ডের বাঁশীর আওয়াজ দেয়ার দেয়ার সাথে সাথে ট্রেন চলতে শুরু করল ।
ভ্রমণপথেরদৃশ্যঃ ইহা ছিল ভরা জ্যোৎস্না রাত্রিঅ বাহিরের নিস্তব্ধ প্রকৃতির তুষার ধবল সৌন্দর্যে আমার চোখ জুড়িয়েছিল। সবুজ মাঠের ভিতর দিয়ে ট্রেন ধাবিত হচ্ছিল। ইহা ছিল দুরপাল্লার রেলগাড়ি এবং ইহা সকল ষ্টেশনে থামেনি। যাত্রা পথে ইহা শুধু শুধৃমাত্র টংগী, ভৈরব, আখাউড়া প্রভৃতি ষ্টেশনে থেমেছিল। সকালে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আমি ষ্পষ্টতই পরিবর্তন অনুধাবন করতে পেরেছিলাম। আমরা তখন পাহাড়ী এলাকা অতিক্রম করছিলাম । যেহেতু আমরা সামনের দিকে যাচ্ছিলাম তাই রাস্তায় উভয় পার্শ্বের পাহড়গুলোকে পিছনের দিকে চলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল। পুরো দৃশ্য আমার চোখে প্রশান্তি এনে দিয়েছিল। আমার বড় ভাই আমাকে বলল যে আমরা কুলাউড়া ষ্টেশন অতিক্রম করে চলে এসেছি এবং এক ঘন্টার মধ্যে আমরা ফেঞ্চুগঞ্জে পৌছাব। আমরা আড়াআড়িভাবে অবস্থান করতে ভূলে গিয়েছিলাম।
ভ্রমণসমাপ্তিঃ আমাকে রেল গাড়ীর ঝাঁকুনি এবঙ হকারদের টিৎকার স্মপর্কে আগেই সচেতন করে দেয়া হয়েছিল। রেলগাড়ি এসে ফেঞ্চুগঞ্জ পৌছল এবং আমাদের ভ্রমণ শেষ হইল।
উপসংহারঃ আমাদের ফেঞ্চুগঞ্জ ভ্রমণ আমার জন্য ছিল এক নুতন অভিজ্ঞতা। ছোট ছোট পাহাড়ে ঘেরা এই সুন্দর শহরটির কথা আমি কখনও ভূলবো না।
নৌকা ভ্রমণ
আমারপ্রিয়খেলা / ফুটবল
সূচনাঃ আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ঘেলা প্রচলিত আছে। এ সকল খেলার মধ্যে আমি ফুটবল অধিক পছন্দ করি। ইংল্যান্ডে ইহা প্রথম খেলা হয়েছিল। এখন সারা বিশ্বে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
কেনপ্রিয়ঃ ফুটবল আমার প্রিয় খেলা কারণ এতে কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ইহা ক্রিকেট খেলার মতো ততোটা ব্যয়বহুল নয় । ইহা আমাদের প্রচুর আনন্দ দেয়। ইহা খুব উত্তেজনাপূর্ণ খেলা। ইহা খেলোয়ার এবং দর্শক উভয়ের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
বর্ণনাঃ ফুটবল উম্মুক্ত স্থানের খেলা। এ খেলার জন্য বড় মাঠের দরকার। আর মাঠের দৈর্ঘ্য হতে হবে ১২০ গজ এবং প্রস্থ ৮০ গজ। প্রত্যেক প্রান্তে দুইটি করে গোল পোস্ট থাকে। দুইটি দলের মধ্যে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রত্যেক দলে এগার জন করে খেলোয়ার থাকে। এদের মধ্যে একজন হল গোল রক্ষক, দুই জন ফুল ব্যাক, তিন জন হাফ ব্যাক এবং পাঁচজন ফরোয়ার্ড । খেলা পরিচালনার জন্য একজন রেফারি থাকে।
কিরূপেখেলাহয়ঃ খেলার প্রারম্ভে প্রথমে বলটি মাঝখানে রাখা হয়। রেফারির বাশি বাজানোর সাথে সাথে খেলা শুরু হয়। অতঃপর প্রত্যেক দলের খেলোয়ারেরা বিপক্ষের গোল পোস্টে বল প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তারা হাত দিয়ে বল স্পর্শ করতে পারে না। একমাত্র গোল রক্ষক বলটি হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারে এবং ধরতে পারে । খেলার মাঝে ১০ মিনিট বিরতি থাকে। বিরতির পর প্রান্ত পরিবর্তিত হয়। যে দল বেশী গোল করতে পারে তাদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
গুনাবলী /উপকারিতা/সুবিধাঃ ফুটবল খেলা আমাদেরকে আইনের প্রতি আনুগত্য হতে শিক্ষা দেয়। ইহা আমাদের আরো শিক্ষা দেয় শৃঙ্খলা, সহযোগীতা এবং নেতৃত্ব সম্পর্কে। ইহা খেলোয়ারদের স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে এবং তাদেরকে তৎপর, যত্নবান, শক্তিশালী এবং পরিশ্রমী করে তোলে।
উপসংহারঃ যদিও ফুটবল খেলায় আহত হওয়ার ঝুকি রয়েছে তথাপি সবাই এ খেলা পছন্দ করে।
স্কুলের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান
পুরস্কারবিতরণীউৎসব
সূচনাঃ পুরস্কার বিতরণী উৎসব কোন স্কুলের জন্য একটি আনন্দের দিন। এ আনন্দের দিনে সভার মাধ্যমে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল ভবন এবং ফুল দিয়ে সুসজ্জিত করে তোলে। তারা আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে গান গায়। নাচে এবং কবিতা আবৃতি করে।
বিদ্যালয়েরউৎসবঃ আমাদের স্কুলের এ বছরের পুরস্কার বিতরণী উৎসব গত রবিবারে অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল ৪ টায় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জেলা প্রশাসক অনুষ্ঠানের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সভাপতিত্ব করেন। সভাপতি কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। ছাত্র-ছাত্রীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করল। প্রধান শিক্ষক চুড়ান্ত ফলাফল পাঠ করেন। ছাত্র – ছাত্রীরা গান গাইল, নাচল, কবিতা আবৃতি করল এবং একটি এক অঙ্কের নাটক মঞ্চস্থ করল।
পুরস্কারবিতরণীঃ অবশেষে সভাপতি পুরস্কার বিতরণ করলেন। প্রত্যেকটি পুরস্কার ছিল কিছু দরকারী বই নিয়ে গঠিত। বইগুলো সুন্দরভাবে বাঁধানো ছিল। অতিরিক্ত শিক্ষা সহায়ক হিসেবে কিছু পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছিল। আমার এক বন্ধু ভাল আচরণের জন্য একটি পুরস্কার পেয়েছিল।
সভাপতির ভাষণঃ অবশেষে সভাপতি উঠে দাঁড়ালেন । সুন্দর বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের ধন্যবাদ জানালেন । তিনি অন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও কঠোর পরিশ্রম করতে বললেন যাতে তারা পরবর্তী বছর পুরস্কার লাভ করতে পারে। এ ধরণের অনুষ্ঠাণ আয়োজনের জন্য তিনি শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানালেন।
উপসংহারঃ পরিশেষে ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্র বিদায়ী গান গাইল। সভাপতি এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে প্রধান শিক্ষক তার আন্তরিক ধন্যবাদ জানালেন। বিকাল ৫ টায় অনুষ্ঠান সমাপ্ত হল।
ক্রিকেট
ক্রিকেট
সূচনাঃ ক্রিকেট একটি ইংরেজ দেশীয় উম্মুক্ত স্বাস্থের খেলা। আজকাল বিশ্বের মধ্যে এটি একটি জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশেও এটি একটি জনপ্রিয় খেলা । ছাত্র এবং অন্য সাবই এটি খেলে থাকে।
খেলোয়াড়, খেলার মাঠ এবং সরঞ্জামাদিরঃ এগার সদস্য বিশিষ্ট দুটো দলের মধ্যে এ খেলাটি হয়ে থাকে। এতে খুব মসৃণ একটি মাঠ প্রয়োজন হয় যাতে বলটি সহজেই গড়িয়ে যায় । দুটো বেল সহ দুটি উইকেট, দুটো ব্যাট ও একটি বল এ খেলার জন্য প্রয়োজন হয় । উইকেট দুটো মধ্যবর্তী স্থান থেকে ২২ গজ দুরে থাকে।
কিভাবেখেলাহয়ঃ দু’দলের মধ্যে এ খেলাটি সংঘটিত হয়ে থাকে। ব্যাট করার জন্য এক পক্ষ আসে এবং অন্য পক্ষ তা প্রতিহত করার জন্য ফিল্ডিং এ নিয়োজিত হয়। একদল থেকে দুজন খেলোয়ার ব্যাটিং এ আসে এবং অন্যদলের সাবই বল নিক্ষেপ করতে এবং উইকেট প্রতিহত করতে চেষ্টা করে। এভাবে ব্যাটিং পক্ষের উইকেটদের পতন হতে হতে দশ জনই বের হয়ে যায়। এতে দু’জন আমপায়ার থেকে যারা খেলাটি নিয়ন্ত্রণ করেন। এভাবে এক তার উইকেট হারিয়ে খেলার সর্বোচ্চ স্কোর সংগ্রহ করে।
জনপ্রিয়তাঃ ক্রিকেট একটি স্বাস্থ্যপ্রদ খেলা। দেহের সকল অঙ্গ-প্রতঙ্গ এবং মাংসপেশী সঠিকভাবে অনুশীলিত হয়ে থাকে। ইহা দলের প্রেরনা যোগায়। এ খেলাটি খেলোয়াড়দের বাধ্যতা, শৃংখলা, অধ্যবসায়, সহিঞ্চু এবং অন্যান্য গুণাবলীর শিক্ষা দিয়ে থাকে।
উপসংহারঃ বিশ্বের সর্বত্র এ খেলাটি জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও ইহা জনপ্রিয়। আমরা আশা করি বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়েরা বিশ্বে প্রচুর যশ ও খ্যাতি অর্জন করবে।
হা-ডু-ডু
হা–ডু–ডু
সূচনাঃবাংলাদেশে অনেক গ্রাম বা স্থানীয় খেলা আছে। এগুলোর মধ্যে হা-ডু-ডু অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং চিত্তাকর্ষক খেলা। ইহা উম্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত খেলাগুলোর অন্যতম। হা-ডু-ডু খেলার অনুরূপ খেলা কাবাডি যা হল আমাদের জাতীয় খেলা। এ খেলাটি আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের সমতল মাঠে খানিকটা খেলা হয়। ইহা অধিক ব্যয়বহুল খেলা নয়।
দলএবংখেলারমাঠঃ হা-ডু-ডু খেলা উম্মুক্ত মাঠে দুইটি দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক দলে সমান সংখ্যক খেলোয়াড় থাকে। খেলোয়ারের এ সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। এ খেলায় সাধারত ৬ থেকে ১১ জন খেলোয়াড় নিয়ে দল গঠন করা হয়। খেলার মাঠ সমান দু’ভাগে বিভক্ত থাকে। প্রত্যেক দলের নিজ নিজ এলাক চিহ্নিত করার জন্য মাঠের ঠিক মাঝখানে একটি রেখা টানা হয়।
কিরূপেখেলাহয়ঃ প্রত্যেক দলের খেলোয়াড়রা নিজ নিজ এলাকায় দাঁড়ায়। তারা সারিবদ্ধভাবে অর্ধরেখা বরাবর একে অপরের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়। খেলা শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রথম দলের একজন খেলোয়াড়কে সজোড়ে বিপক্ষ এলাকায় পাঠানো। সর্বক্ষণ তাকে শ্বাসের সাথে মিল রাখিয়া হা-ডু-ডু শব্দটি উচ্চারণ করতে হয়। শ্বাস রেখে তাকে প্রাণপণ চেষ্ঠা করতে হয়। বিপক্ষ দলের এক বা একাধিক খেলোয়াড়কে স্পর্শ করার এবং নিরাপদে নিজ এলাকায় ফিরে আসার। যদি সে বিপক্ষ সে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়কে স্পর্শ করার পর নিজ এলাকায় ফিরে আসতে পারে তাহলে সে জীবিত থাকে। মৃত খেলোয়াড় বা খেলোয়াড়বৃন্দ খেলা থেকে সাময়িকভাবে বহিস্কৃত হয়। অপরদিকে সে যদি বিপক্ষ দলের খেলোয়ার কর্তৃক ধৃত হয় তাহলে তাকে মৃত ঘোষনা করা হয়। এভাবে দলগুলো পর্যায়ক্রমে তাদের খেলোয়াড়দেরকে বিপক্ষ দলের এলাকায় আক্রমন করার জন্য পাঠায়। বিপক্ষ দলের একজন খেলোয়াড় মৃত্যুর বিনিময়ে একজন মৃত খেলোয়াড় পুনরায় জীবিত হতে পারে। যখন একটি দলের সকল খেলোয়াড়কে মৃত ঘোষণা করা হয় তখন খেলা শেষ হয়ে যায়। আর যে দলটির খেলোয়াড় জীবিত থাকে তাদেরকে বিজয়ী দল বলা হয়।
খেলারমনোমুগদ্ধকরঅংশঃ হা-ডু-ডু খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই খুব আনন্দদায়ক। আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ খেলাকে আরো বেশী চিত্তাকর্ষক করে তোলে। দর্শকবৃন্দ ঐ ধরনের দৃশ্যাবলী খুব আনন্দের উপভোগ করে। যখন হা-ডু-ডু উচ্চারণরত একজন খেলোয়াড়কে তার বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা চেঁপে ধরে আর সে তখন খুব অসহায়ের মত তাদেরকে পরাভূত করার চেষ্টা করে।
উপসংহারঃ হা-ডু-ডু আমাদের দেশের একটি স্থানীয় খেলা। এ খেলা কান ব্যয় ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে পারে। ইহা আমাদের শক্তিশালী এবং কর্মঠ করে। একদা ইহা ছিল খুব জনপ্রিয় খেলা। আধুনিক যুব সমাজের কাছে এখন ইহা তাদের আবেদন হারিয়ে ফেলেছে। এ খেলাকে পুনরায় জনপ্রিয় করে তোলার জন্য আমাদের উচিৎ যুব সমাজকে এ খেলার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলার যথাযথ পদেক্ষেপ নেয়া।
আমারদেখাএকটিফুটবলখেলা
সূচনাঃ বহির্বিভাগের সকল খেলার মধ্যে আমি ফুটবল খেলা অধিক পছন্দ করি। ইহা হল ইংরেজদের খেলা। এ খেলাটি আনন্দ এবং উত্তেজনায় ভরা। কাজেই অল্পবয়সী এবং মধ্যবয়সী লোক এ প্রতিযোগীতাপূর্ণ খেলাটি দেখার জন্য আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করে। আমি বর্তমান মাসের ১২ তারিখে প্রতিযোগীতামূলক একটি ফুটবল খেলা প্রত্যক্ষ করেছিলাম। ইহা আমাদের স্কুলের ফুটবল দল এবং আমাদের শহরের শ্রেষ্ঠ একাদশ দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ইহা চাঁদপুর খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
খেলাহিসেবেফুটবলেরপ্রতিআমারআগ্রহঃ ফুটবল একটি জাতীয় খেলা। ইহা বড় এবং খেলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক লোক এ খেলা উপভোগ করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে এ খেলাটি উত্তেজনায় ভরপুর। এ খেলার সময়কাল বেশী দীর্ঘ নয়। অপরপক্ষে ইহা আমাদের নিয়মবর্তিতা এবং পারস্পরিক সহযোগীতা শিক্ষা দেয়। এ সকল কারণে আমার শৈশব কাল থেকে আমি ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহী।
কিরূপেখেলাশুরুহয়ঃ খেলা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পূর্বে উভয় দলের খেলোয়াড়বৃন্দ মাঠে প্রবেশ করে। রেফারি সকল খেলোয়াড়বৃন্দকে এবং উভয় দলের পরিচালককে আমন্ত্রণ জানান। অতঃপর তাদেরকে প্রধান অতিথির সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। তারপর রেফারি উপরের দিকে মুদ্রা নিক্ষেপ করেন। আমাদের স্কুল দল মুদ্রা নিক্ষেপে জয় লাভ করল। খেলোয়াড়রা তাদের নিজ নিজ অবস্থান নিল। রেফারি বাঁশি বাজালেন এবং বলে লাথি মরার সাথে সাথে খেলা শুরু হল। অতঃপর উভয় দলের খেলোয়াড়রা তাদের নিজ নিজ খেলা চালিয়ে গেল।
খেলারপ্রথমার্ধঃ খেলার প্রথমার্ধ উভয় দল বেশ কয়েকটি বিক্ষিপ্ত আক্রমন রচনা করে কিন্তু কোন ফল আদায় করে নিতে পারেনি। ইহা ছিল খুব কঠিন প্রতিযোগীতা কেহই জানত না কোন দল জয়ী হবে।
খেলারদ্বিতীয়ার্থঃ খেলার দ্বিতীয়ার্ধেও উভয় দল বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ পরিকল্পিত আক্রমন রচনা করে। কিন্তু উভয় দলের প্রতিরক্ষাভাগের খেলোয়াড়রা বিপক্ষ দলকে আক্রমন করতে ব্যর্থ হল। খেলার অবস্থা বেশ জটিল আকার নিল। যে কোন মুহুর্তে যে কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারে। মাত্র এক মিনিট খেলা শেষ হওয়ার বাকী রইল। ভাগ্য আমাদের স্কুল দলের অনুকূলে গেল। মাঝ মাঠের এক খেলোয়াড় ডান প্রান্তের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে খুব সুন্দর একটি ভল পেল এবং সাথে সাথে বলটি জাঁলে জড়িয়ে দিল। চারদিক প্রচন্ড উল্লাস এবং করতালিতে মুখর হয়ে উঠল। হঠাৎ খেলার সময় শেষ হয়ে গেল।
উপসংহারঃ আমার মনে হয় ইহা ছিল একটি ভাল প্রতিযোগীতা। প্রায় সকল শিক্ষকবৃন্দ এবং ছাত্র -ছাত্রীরা খেলাটি উপভোগ করেছিল। এ খেলাটির কথা আমার চিরদিন স্বরণ থাকবে।
একটি ধর্মিয় উৎসব/ ঈদুল ফিতর
ঈদুর ফিতর
সূচনাঃ সকল ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে ঈদুর ফিতর একটি বড় উৎসব। এদিনে মুসলমানগণ দান খয়রাত করে এবং গরীবদের মধ্যে নির্ধারিত অর্থ বা খাদ্য দ্রব্য বিতরণ করে থাকে। ইহাকেই বলা হয় “ফিতরা” আর এ জন্যেই এর নাম হয়েছে ঈদুল ফিতর।
বর্ণনাঃ এদিনে সারা দেশে আড়ম্বর করে কাটায়। ছেলে মেয়েরা অতীব উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে রাত কাটায় এবং বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেয়। কেহ কেহ আতশবাজি পোড়ায়, কেহ বা বাড়ি সাজায় ও আলোকিত করে। যত শীঘ্র সম্ভব তারা ভোরে ঘুম থেকে উঠে পুকুরে বা নদীতে স্নান করে পাক সাফ হয়। তারপর তারা নুতন ও সুন্দর সুন্দর জামা কাপড় পরে, আতর গোলাপ ব্যবহার করে ও বন্ধুদের একে অন্যের সাথে কোলাকুলি করে। সবাই সেমাই ও মিষ্টি গ্রহণ করে। গরীব লোকেরা ধনীদের বাড়িতে ভীর জমায় এবং তাদেরকে খাওয়ানো হয়। সর্বত্রই আনন্দের ঢেউ বইতে থাকে।
প্রার্থনাঃ এরপর সবাই ঈদগাতে বা ময়দানের দিকে অগ্রসর হতে থাকে এবং সেখানে প্রার্থনার জন্য সকলে জমায়েত হয়। বিপুল সংখ্যক ছেলেমেয়ে ও লোকজনের সমাবেশ হয় ময়দানে। যখন নামায শেষ হয় তখন ইমাম সাহেব খুতবা পেশ করেন। তিনি দ্বীনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য করেন। তিনি তাদেরকে শত্রুতা, হিংসা ও দ্বন্দ্ব ভূলে নাজাতের জন্য মোনাজাত করেন।
উপসংহারঃ মোনাজাত শেষ করে অবশেষে লোকজন মাঠে একে অন্যের মধ্যে শুরু হয় আলিঙ্গন এবং একে অন্যের বাড়িতে দাওয়াত দেয়া নেয়ার পালা। বিকালে তারা আত্মীয়দের বাড়ি ও বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে বেড়ানোর আনন্দে মেতে উঠে। এ দিন দ্বন্দ্ব ও শত্রুতা ভূলে গিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবন্ধ হওয়া আমাদের বিশেষ কর্তব্য।
মে দিবস
মেদিবস
সূচনাঃ মে দিবস একটি জাতীয় দিবস। মে মাসের প্রথম দিনটিকে মে দিবস বলা হয়। সারা বিশ্বে এ দিনটিকে ছুটি হিসেবে উপভোগ করা হয়। এ দিনটিতে সাধারণ লোক উৎসবের মাধ্যমে ঐ সকল শ্রমিকদের স্মৃতি রক্ষা করে যারা ১৮৮৬ সালে সিকাগো শহরে ত্যাগ স্বীকার করেছিল।
দিনটিরপটভূমিঃ ইহা স্বরণাতীত যে পুঁজিপতিরা তাদের শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের সাথে তাদের স্ত্রী পরিজন এবং সন্তানদের নিযুক্ত করত এবং দীর্ঘ সময় তাদের কাজ করতে বাধ্য করা হত। তাদেরকে অল্প মজুরী দেয়া হত এবং তা দিয়ে শ্রমিকরা তাদের জীবনের মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে পারত না। তাদের অবস্থা ছিল খুব শোচনীয় এবং বেদনাদায়ক। শুধু তাই-ই নয় শ্রমিকরা ভিবিন্নভাবে অত্যাচারিত এবং উপেক্ষিত হত। তাই শ্রমিকরা শোষনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করল। সর্ব প্রথমে সিকাগো শহরে এ আন্দোলন দেখা দিল। তারা কিছু সুযোগ-সুবিধা এবং কাজের নির্দিষ্ট সময় দাবী করল। পুজিপতি সরকার এবং তার প্রতিনিধিরা আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিল। ১৮৮৬ সালের ১লা মে তারা শ্রমিকদের মিছিলে প্রকাশ্যে গুলি চালায় এবং তাতে কিছু সংখ্যক শ্রমিক মারা যায়। তাদের কর্তৃক আরো শত শত শ্রমিক আহত হয়েছিল। কিছু সংখ্যক নেতাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। স্বভাবতই ইহা ছিল অমানবিক এবং বর্বরোচিত। এই দুঃখজনক ঘটনাটি শ্রমকিরা এবং বিশ্বের সচেতন লোকেরা গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছিল। এ দিনটিতে শ্রমিকদের জন্য অনেক কিছু অর্জিত হয়েছিল। কাজেই ১৮৮৬ সালে সংঘটিত হত্যাকান্ড থেকে অনুপ্রেরনা লাভের জন্য প্রতি বছর এ দিনটিকে সারা বিশ্বে বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়।
অর্জিতবস্তুঃ সিকাগো শহরে শ্রমিকদের মহান আত্মত্যাগ মানব সভ্যতার ইতিহাসে কে নুতন অধ্যায়ের সৃষ্টি হল। এ ঘটনার পূর্বে শ্রমিকদের দৈনিক ১২ ঘন্টা অথবা ১৩ ঘন্টা কাজ করতে হত। এখন তাদের ৮ ঘন্টা কাজ করার দাবী গৃহীত হল। অবশ্য তাদেরকে জীবন ধারনের কিছু সুযোগ সুবিধাও প্রদান করা হয়েছিল।
দিনটিরতাৎপর্যঃ এদিনটি হল অবিচার, অত্যাচার এবং নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে স্বরূপ। ইহা সকল শ্রেণীর শ্রমিকদের যে কোন অন্যায়ের রিরুদ্ধে তাদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের অনুপ্রেরনা যোগায়।
উপসংহারঃ ১৮৮৬ সালে সিকাগো শহরের শ্রমিকদের মহান আত্মত্যাগ শ্রমিকরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্বরণ করে এবং শোষণমুক্ত সমাজ ও অর্থনৈতিক ন্যায় বিচার দাবী করে। এ দিনটিতে শ্রমিকদের এ মহান আত্মত্যাগ মূল্যায়িত হউক।
একুশে ফেব্রুয়ারি/ শহীদ দিবস
২১শেফেব্রুয়ারি
সূচনাঃ ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক দিন। এ দিনটি অমর একুশে হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। ইহা বাংলাদেশীদের জন্য উদ্যম এবং অনুপ্রেরনার উৎস। ইহা শোষণ এবং অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ। এদিনটি সরকারী ছুটির দিন। প্রতি বছর এ দিনটিকে আমরা মর্যদা সহকারে উদযাপন করি।
দিনটিরপটভূমিঃ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে আমাদের ভাষা শহীদরা এক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল এবং দিনটি স্বরণীয় হয়ে রইল। পূর্ব পাকিস্তানে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলাম। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা দেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত। তারা স্পষ্টত বুঝতে পারল যে সংখ্যা গরিষ্ঠদের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘস্থায়ী হবে না যদি আমাদের ভাষা এবং সাহিত্যকে দাবিয়ে রাখা না হয়। তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা উর্দুকে পাকিস্তানের জন্ম লগ্ন থেকে তেমন কোন জোঁড়ালো প্রতিবাদের সম্মুখীন হল না। পাকিস্তানের জন্ম লগ্ন থেকে বিরোধী শিবির সংঘঠিত ছিল না। রাজনৈতিক দিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা ছিল সংবেদনশীল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহসী ছাত্ররা এ দাবি মোকাবেলায় এগিয়ে আসল তার ঐ ঘোষণার রিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাল এবং আন্দোলন শুরু করল। আর এ আন্দোলনকে ভাষা আন্দোলন বলা হয়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এই অবৈধ এবং অপরিকল্পিত ঘোষণার প্রতিবাদে মিছিল বের করে। পাকিস্তানি শাসকরা বন্ধুকের নলের মাধ্যমে এই আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিল। কিন্তু অনেক নাম না জানা ছেলেরা তাদের স্বীয় জীবনের বিনিময়ে আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছিল। শুধু তাই-ই নয়, ভাষা শহীদদের রক্তে বাংলাদেশী জাতীয়তার জন্ম হয়েছিল।
বিশ্বস্বীকৃতিঃ আমাদের ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষনা করল।
কিরূপেদিনটিউদযাপনকরাহয়ঃ একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের একটি জাতীয় দিবস। কিন্তু আজ ইহা আন্তর্জাতিক দিবস। জাতি মর্যদা সহকারে এ দিনটি উৎযাপন করে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। প্রত্যুষে খালি পায়ে পদযাত্রা বের করা হয়। আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের মাজার জিয়ারত করা হয় এবং সেখানে ফাতেহা পাঠ করা হয়। সকল সংবাদ মাধ্যম, অফিস আদালত, প্রতিষ্ঠাণ, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সমিতি প্রভৃতি তাদের নিজ নিজ অনুষ্ঠাণমালা পালন করে থাকে। দিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠাণ, প্রদর্শনী, প্রতিযোগীতা প্রভৃতি।
উপসংহারঃ ২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের অন্যায় এবং শোসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শিক্ষা দেয়। ইহা আমাদের মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষাকে ভালবাসতে শিক্ষা দেয়। ইহা আমাদের নিজেকে উদঘাটন করতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশেরস্বাধীনতাযুদ্ধ
সূচনাঃ বাংলাদেশ একটি গর্বিত দেশ কারণ গৌরবময় স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে এর আত্মপ্রকাশ। যদিও আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা সত্যিকারার্থে এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
স্বাধীনতাযুদ্ধেরঅতীতইতিহাসঃ বাংলাদেশ ব্রিটিশদের কাছে তার স্বাধীনতা হারায় যখন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে হেরেছিল। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারতকে ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীণ রাষ্ট্রে বিভক্ত করে। পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল ঠিকই কিন্তু বাংলাদেশের লোক ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারপরও তারা সকল ধরনের ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত হল। বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত হল। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণ ইহা সহ্য করতে পারল না এবং এ অবস্থা থেকে তাদের মুক্তির জন্য তারা জোরালো আন্দোলন শুরু করল।
স্বাধীনতাযুদ্ধেরপটভূমিঃ শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের আরো কিছু সংখ্যক দেশ প্রেমিক তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠে সোচ্চার হয়ে উঠলেন। ১৯৬৮ সালে শেখ মুজিবুর রহমান এবং আরো কিছু সংখ্যক বাংলাদেশীকে আগরতলা ষড়যন্ত্র নামে একটি মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হল। কিন্তু বাংলার জনগণ এই মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে প্রচন্ড আন্দোলন শুরু করে। আইয়ুব খান তাদেরকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। তারপর ইয়াহিয়া খান আসেন এবং তিনি ১৯৭০ সালে সাধারন নির্বাচনের ঘোষনা দেন। শেখ মুজিবুর রহমানের দল নিশ্চিতরূপে জাতীয় বিধান সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু ইয়াহিয়া ক্ষমতা হস্তান্তর করলনা বরং তিনি জাতীয় বিধান সভার সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করেন যার ফলে শেখ মুজিবুর রহমান অহিংসাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। ইয়াহিয়া শেখ মুজিবুরের সাথে মিথ্যা সংলাপ শুরু করেন এবং একই সাথে তিনি সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করতে লাগলেন।
১৯৭১সালেরস্বাধীনতাসংগ্রামঃ ২৫শে মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো রাত্রি। সে রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা বাংলার নিরস্ত্র জনগনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হয় এবং পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করা হয়। যখন স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল তখন রাতারাতি নুতন মুক্তিযোদ্ধা জন্ম নিতে লাগল এবং নির্বিঘ্নে তার দক্ষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত পাকিস্তানি সৈন্যদের মোকাবেলা করতে লাগল। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল মুজিব নগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার গঠন করা হয় কিন্তু পাকিস্তানিরা একটি জাতিকে জিম্মায় রেখে নির্মূল করার জন্য পৃথিবীর জঘন্যতম কাজ চালিয়ে গেল। মহিলাদের ধর্ষন এবং হত্যা করা হলো। বিশ্বের জনতা পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচার নিপীড়ণ যে সকল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল তা অনুমান করতে পারল। লক্ষ লক্ষ নিষ্পাপ বাঙালী তাদের জীবনের ভয়ে সীমানা পাড় হয়ে পালিয়ে গেল। যখন তাদের অপরাধ চরমে পৌছল তখন তারা ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের মিলিত বাহিনীর সাথে সরাসরি আক্রমনে আসল।
১৬ইডিসেম্বরঃ শেষ অবস্থায় বিজয় ছিনিয়ে আনতে মাত্র দুইদিন লেগেছিল এবং গৌরবময় ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যরা আত্মসমর্পন করল। আমাদের বিজয় দিবস বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের জন্ম নিশ্চিত হল।
উপসংহারঃ যদিও আমরা অনেক রক্ত ঝরার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা একটি শক্তিশালী জাতি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আমার মনে হয় ১৯৭১ সালের আমাদের মহান আত্মত্যাগের কথা ভূলে গিয়েছি। কাজেই আমাদের প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিৎ এ দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা।
বিজয় দিবস
Search for:
Search …
RECENT POSTS
বাংলা ২য় পত্র (সমাস)
HELLO BANGLADESH
RECENT COMMENTS
adminrifa on NATURAL BEAUTY: BIRDS OF BANGLADESH
adminrifa on NATURAL BEAUTY: BIRDS OF BANGLADESH
adminrifa on ENGLISH FOR TODAY CLASS-7
Php News Script on NATURAL BEAUTY: BIRDS OF BANGLADESH
educa
ARCHIVES
August 2017
December 2013
CATEGORIES
Uncategorized
AMAR WEB PORTAL
Log in
Entries RSS
Comments RSS
WordPress.org
Proudly powered by WordPres
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন